এম এ রহিম চৌগাছা (যশোর) : যশোরের চৌগাছায় বৃষ্টির ভরা মৌসুমেও বৃষ্টির দেখা নেই। খরায় আউশের ক্ষেত শুকিয়ে চৌচির হয়ে পড়েছে! আমন চাষ নিয়ে বিপাকে রয়েছে উপজেলার চাষিরা। অন্যদিকে পাট জাগ দেয়া নিয়েও চাষিদের কপালে দুশ্চিন্তার ভাজ। উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর বলছে, আমনের চারা রোপণের উপযুক্ত সময় আষাঢ়ের শেষ সপ্তাহ থেকে শ্রাবণের শেষ পর্যন্ত। এবার মৌসুমের শুরু থেকেই স্বাভাবিক বৃষ্টির দেখা পাচ্ছেন না কৃষক। পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হলে ক্ষেতে সেচ দিতে কৃষকের বাড়তি খরচ হবে। আবার ক্ষেতে আগাছা, রোগ ও পোকার আক্রমণ বেড়ে যাবে। এতে ফলন কমে যাওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে।
বাংলা দিনপঞ্জির হিসাবে আজ (শুক্রবার) আষাঢ় মাসের শেষ দিন। কিন্তু এই ভরা বর্ষার মৌসুমে স্বাভাবিক বৃষ্টির দেখা নেই। কখনো কখনো দুএক পশলা বৃষ্টি হচ্ছে। কিন্তু স্বাভাবিক বৃষ্টির দেখা মিলছে না। এতে উপজেলার প্রায় দুই হাজার হেক্টর আউশ চাষি বিপাকে পড়েছে। চাষিদের স্বপ্নের ক্ষেত শুকিয়ে হয়ে গেছে চৌচির । চৌগাছায় প্রচন্ড খরায় বিবর্ণ হচ্ছে সবুজ ধানের চারা ক্ষেতের জমি ফেটে চৌচির হয়ে যাচ্ছে। এদিকে দীর্ঘদিনবৃষ্টি না হওয়ায় আমন খেতে সময়মতো হাল দিতে পারছেন না কৃষকেরা। দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা। এমনকি রোদের তাপে ঘর থেকে বের হতে পারছেন না কেউ। তীব্র তাপে প্রাণীকুল ও জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। খাঁ খাঁ করছে ফসলি মাঠ। অন্যদিকে পাট জাগ দেয়ার সময় হয়ে এসেছে। কিন্তু কোথাও পানি না থাকায় পাট চাষিদের কপালেও পড়েছে চিন্তার ভাজ।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ১১ ইউনিয়ন ও পৌরসভা এলাকায় চলতি মৌসুমে ২ হাজার হেক্টর জমিতে রোপা আউশ ধানের চাষ হয়েছে এবং আমন ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ১৮ হাজার হেক্টর জমিতে। বৃষ্টি না হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে আউশের ক্ষেত। অন্যদিকে আমনের জমি প্রস্তুত করতে পারছেন না। বিগত বছরে আষাঢ়ের ১৫ তারিখের পর থেকে জমিতে রোপা আমনের চারা রোপণ শুরু করতেন এ এলাকার কৃষকরা। প্রচ- খরার কারণে চলতি সৌসুমে দেরী হচ্ছে। উপজেলায় ২ হাজার ২শ ৫০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। বৃষ্টি না হলে পাট চাষীদের ব্যাপক ভোগান্তি পোহাতে হবে।
উপজেলার সুখপুকুরিয়া, নারায়নপুর, হাকিমপুর, জগদিশপুর, পাতিবিলা, স্বরুপদাহ, ধুলিয়ানী ও পাশাপোল এলাকার মাঠে ঘুরে দেখা গেছে, বৃষ্টি না হওয়ায় ফসলি জমি ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। খাঁ খাঁ করছে মাঠের পর মাঠ। অনেকে আউশ ধানের ক্ষেতে সেচ দিচ্ছেন। অনেক পাট চাষীর পাট কাটা জরুরী হলেও পানির অভাবে কাটতে পারছেন না। উপজেলার নারায়নপুর ইউনিয়নের পেটভরা গ্রামের আউশ চাষি আনছার আলী বলেন, ভরা মৌসুমেও বৃষ্টি নাহওয়ায় প্রচন্ড তাপদহে তার আউশ ক্ষেত ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। রামকৃষ্ণপুর গ্রামের কৃষক লাভলুর রহমান, আবু সিদ্দিক, ছোট খোকনসহ অনেকে বলেন, ক্ষরায় মাঠে ধান-পাট ও সবজির গাছ পুড়ে বি বর্ণ হতে শুরুকরেছে।
আউস ক্ষেত ফেটে চৌচির হয়েছে। আমনের জমি তৈরী করতে জমিতে হাল দেওয়া যায়নি। বৃষ্টি হলে এত দিন জমি তৈরি করা হতো, বৃষ্টিনা হওয়াতে সময়মতো চারা রোপণ করা সম্ভব হচ্ছেনা। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার সমরেন বিশ্বাস বলেন, খরার কারণে কৃষকেদের মাঠে হাল চাষ করতে বিলম্ব হচ্ছে। তবে এ কারণে ফলনে উপজেলায় তেমন একটা প্রভাব পড়বেনা। বৃষ্টি হতে দেরি হলে সেচদিয়ে জমি তৈরি করে রোপা আমন ধান রোপণ করা যেতে পারে।
কিউএনবি/আয়শা/১৫ জুলাই ২০২২, খ্রিস্টাব্দ/দুপুর ১:৪৪