ডেসক্ নিউজ : গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে সরকারবিরোধী ঐক্য গড়ে তোলা হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেছেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, আমরা সবাই মিলে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনব। বাংলাদেশে একদিন গণতন্ত্র ফিরে আসবে। শহীদ জিয়ার নেতৃত্বে পেরেছি, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে পেরেছি, এবার তারেক রহমানের নেতৃত্বেও পারব ইনশাআল্লাহ। ১৯৮৩ সালে স্বৈরাচার প্রতিরোধ আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে আজ সোমবার দুপুরে এক আলোচনাসভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে নব্বইয়ের ডাকসু ও সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের যৌথ উদ্যোগে ‘স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস’ উপলক্ষে এই আলোচনাসভা হয়।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য তারাই আমাদের সাথি হবে যারা গণতন্ত্র চায়, যারা গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা চায়। যারা সরকারের সুবিধাভোগী হয়ে ব্যক্তিগত লাভের জন্য চিন্তা করে না তেমন মানুষ। তেমন সংগঠন যারা, তেমন দল যারা, যারা বাংলাদেশকে ভালোবাসে, যারা গণতন্ত্র পছন্দ করে, যারা উন্নয়ন চায় সবার জন্য তাদের সবার সাথে আমাদের ঐক্য হবে। তাদের সবাইকে নিয়ে আমরা একসাথে লড়াই করব। ‘নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমরা সেই বাংলাদেশ চাই যে বাংলাদেশের উন্নয়ন হবে জনগণের উন্নয়ন, কতিপয় ব্যক্তির নয়, কতিপয় গোষ্ঠীর নয়। আমরা সেই বাংলাদেশ চাই যেখানে মানুষের কথা বলার অধিকার থাকবে, যেখানে মানুষের ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার থাকবে, মানুষের নির্বিঘ্নে ভোট দেওয়ার অধিকার থাকবে। ‘
সেই বাংলাদেশ ফিরে পাওয়ার জন্য আবেদন-নিবেদন করলে হবে না, লড়াই করতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনে আমাদের এই দেশে মহান মুক্তিযুদ্ধের যে চেতনা সেটার বাস্তবায়ন করব। মহান ভাষা আন্দোলনে যারা জীবন দিয়েছেন তাদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাব। এই ১৪ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৩ সালে যারা জীবন দিয়েছেন আমরা তাদের রক্তের ঋণ শোধ করব এই লড়াইয়ের মাধ্যমে। আসুন আগামী দিনে সেই লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুতি নিই।
দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমাদের নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন লড়াইয়ের ময়দানে নেতৃত্ব দিয়েছেন। আজকে তিনি একটা রাজনীতির প্রতিহিংসার শিকার হয়ে কারাগারে আবদ্ধ, দারুণভাবে অসুস্থ। কিন্তু তার আদর্শ, আমাদের প্রতি তার স্নেহ এবং বিভিন্ন সময়ে যে দায়বোধ প্রমাণ করেছেন তার প্রতিদান দেওয়ার সময় এসেছে। তারেক রহমান অন্যায়ভাবে সরকারি রোষের শিকার হয়ে দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। তাকে আমাদের মাঝে ফিরিয়ে আনতে হবে। আমাদের নেতা শহীদ জিয়ার স্বপ্ন পূরণ করতে হবে, যে স্বপ্ন পূরণের জন্য তিনি অকালে জীবন দিয়েছেন, শহীদ হয়েছেন, সেই স্বপ্ন পূরণ করতে হবে। ‘
গণতন্ত্র ফেরানোর চলমান আন্দোলনে অতীতের মতো ছাত্রসমাজকে আরো সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানান নজরুল ইসলাম খান। এর আগে সকাল ৯টায় আমানউল্লাহ আমানের নেতৃত্বে ছাত্র নেতৃবৃন্দ কার্জন হল ও শিক্ষা ভবনের সামনে শিক্ষা ও গণতন্ত্রের স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। নব্বইয়ের ডাকসুর ভিপি আমানউল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে ও তৎকালীন ডাকসুর সাধারণ সম্পাদক খায়রুল কবির খোকনের সঞ্চালনায় আলোচনাসভায় সাবেক ছাত্রনেতা আবদুল্লাহ আল মামুন, এম এ জলিল, আসাদুজ্জামান রিপন, হাবিবুর রহমান হাবিব, জহির উদ্দিন স্বপন, ফজলুল হক মিলন, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, নাজিম উদ্দিন আলম, সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, খন্দকার লুতফর রহমান, শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, এ বি এম মোশাররফ হোসেন, আজিজুল বারী হেলাল, আসাদুর রহমান খান, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, আমিরুল ইসলাম খান আলিম, আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, শহীদুল ইসলাম বাবুল ও ছাত্রদলের ফজলুর রহমান খোকন বক্তব্য দেন।
কিউএনবি/আয়শা/১৪ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ/সন্ধ্যা ৭:৪৯