মঙ্গলবার, ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০২:২২ পূর্বাহ্ন

‘মাতৃ-পিতৃ পরিচয়হীনদেরও ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে’

Reporter Name
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ৬ জানুয়ারী, ২০২২
  • ৯২ Time View

 

ডেস্ক নিউজ : মাতৃ-পিতৃ পরিচয়হীনসহ সকলকে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার তাগিদ দিয়েছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। তিনি বলেছেন, ভোট দেওয়া সব নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার। যারা পরিচয়হীন, তাদের পিতা-মাতা নেই বা পরিচয় নেই, তা নয়। হয়তোবা কোনো কারণে তাদের নাম জানা যাচ্ছে না বা বিস্মৃতির অতলে তাদের নাম হারিয়ে গেছে। এ জন্য তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যাবে না। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে নির্বাচন কমিশন (ইসি) আয়োজিত ‘ভোটার তালিকায় পরিচয়হীনদের পিতা-মাতার নাম লিপিবদ্ধকরণে জটিলতা নিরসন’ শীর্ষক কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

নির্বাচন কমিশন সচিব হুমায়ুন কবীর খোন্দকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা, নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, মো. রফিকুল ইসলাম, বেগম কবিতা খানম ও অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাহাদাত হোসেন চৌধুরী। অনুষ্ঠানে স্পিকার বলেন, সকল নাগরিকের ব্যক্তি-পরিচয় দেওয়ার অধিকার রয়েছে। এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাই সমাজের একটি অংশকে বা কোনো বিচ্ছিন্ন অংশকে ভোটার তালিকা বা জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) থেকে বাইরে রাখা সঠিক না। কাউকে এনআইডি’র বাইরে রাখলে তার নাগরিক অধিকার ক্ষুণ্ণ হয়। পিছিয়ে পড়া এ সমস্ত জনগোষ্ঠীর ডাটাবেজ তৈরি করতে হবে। কেননা, ডিজিটাল বাংলাদেশের মূল বিষয় হলো অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনীতি। অনগ্রসর অংশকে এগিয়ে নিতে বিশেষ বিধান আনার প্রতিও গুরুত্ব দেন তিনি।

ভোটার তালিকা একটি জাতীয় তথ্যভান্ডার ও রাষ্ট্রের অমূল্য সম্পদ উল্লেখ করে ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, এটা শুধু নির্বাচন কমিশনের কাজে লাগে তা নয়; সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এই তথ্যভান্ডার ব্যবহার করে। করোনাকালে দুস্থ ও অসহায়দের আর্থিক সহায়তাও এই তথ্য ব্যবহার করা হয়েছে। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতেও ব্যবহার করা হয়। তাই যাদের পরিচয় নেই, তাদের এই তথ্যভান্ডারে সম্পৃক্ত করতে হবে। প্রত্যেক মানুষের একটা নিজস্ব পরিচয় দিতে হবে। এ জন্য আইনি পদক্ষেপ বা আইন পাস করতে হলে, তাও করতে হবে। প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

অনুষ্ঠানে সিইসি কে এম নূরুল হুদা বলেন, সংবিধান যদি মেনে চলতে হয় তবে লাখ লাখ পরিচয়হীনদের বাদ দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। বর্তমানে যে পদ্ধতি আছে, তাতে জায়গা নেই। আইনি কাঠামো পরিবর্তন করতে হবে। কারণ এনআইডি না থাকায় তারা অনেক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তাই অনেকেই মিথ্যা তথ্য দিয়ে এনআইডি নিচ্ছে। পরিচয়হীনরা কেন ভ্রান্ত ধারণা দিয়ে ভোটার হবে? তিনি বলেন, এনআইডি সার্ভার থেকে ১৫০টির বেশি প্রতিষ্ঠান সেবা নিচ্ছে। সেখানে তাদের জায়গা নেই। তাই মেইন স্ট্রিমে আনতে চাচ্ছি। এদের মেইন স্ট্রিমে আনতে হবে। আগামীতে নির্বাচন কমিশন এই ধারাবাহিকতা রক্ষা করবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

বর্তমান বাস্তবতায় মানবাধিকার নিয়ে কতটুকু কথা বলা সম্ভব হচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। তিনি বলেন, সংবিধানে মানবাধিকার নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। তাই সংবিধানের নির্দেশনা মানতে ধর্ম-বর্ণ-গোত্র ও লিঙ্গ নির্বাশেষে সকলকে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করতে হবে। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধে নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম পরিচয়হীনদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করতে আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, মহিল ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয় এবং পাসপোর্ট ও বহিরাগমন অধিদপ্তরের সঙ্গে আন্ত মন্ত্রণালয়কে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুপারিশ করেন। তিনি বলেন, পরিচয়হীনরা স্কুলে ভর্তি, ভূমি নিবন্ধন, ড্রাইভিং লাইসেন্স, ব্যাংক ঋণসহ ১৬ ধরনের সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তাই আইনে পরিবর্তন এনে বিষয়টির সমাধান প্রয়োজন।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/৬ই জানুয়ারি, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ/বিকাল ৫:৩৭

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

September 2025
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit