বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:৩৫ অপরাহ্ন

চাপের কাছে নত হবে না ইরান, পারমাণবিক আলোচনা নিয়ে তীব্র বাকযুদ্ধ

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৫
  • ৩৯ Time View

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা পুনরায় শুরুর শর্তে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে তীব্র বাকযুদ্ধ হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি আলোচনায় প্রস্তুতির কথা জানালেও ইরান ওয়াশিংটনের শর্ত প্রত্যাখ্যান করে স্পষ্ট করেছে—কোনো চাপ ও ভীতি প্রদর্শনের কাছে তারা নত হবে না।

মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র জানায়, তেহরান যদি সরাসরি ও অর্থবহ আলোচনায় প্রস্তুত থাকে, তবে তারা আনুষ্ঠানিক আলোচনায় বসতে রাজি। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উপ-মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত মরগান অর্টাগাস বলেন, যে কোনো চুক্তির ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের কিছু স্পষ্ট প্রত্যাশা রয়েছে। তার ভাষায়, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো—ইরানের ভেতরে কোনো ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ চলবে না। এটি আমাদের নীতিগত অবস্থান।

অন্যদিকে ইরানের জাতিসংঘ রাষ্ট্রদূত আমির সাঈদ ইরাভানি যুক্তরাষ্ট্রের ‘শূন্য সমৃদ্ধকরণ’ নীতিকে অনায্য ও আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থি বলে আখ্যা দেন। তিনি বলেন, ন্যায্য ও অর্থবহ যে কোনো আলোচনাকে আমরা স্বাগত জানাই। কিন্তু শূন্য সমৃদ্ধকরণের ওপর জোর দেওয়া এনপিটি (নন-প্রোলিফারেশন ট্রিটি)-এর সদস্য হিসেবে আমাদের অধিকারবিরোধী। এর অর্থ হলো—তারা ন্যায্য আলোচনা চায় না ইরাভানি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ওপর পূর্বনির্ধারিত শর্ত চাপিয়ে দিতে চায়। ইরান কোনো চাপ ও ভয়ভীতির কাছে মাথা নত করবে না।

এর আগে, গত জুনে ইরান ও ইসরাইলের মধ্যে ১২ দিনের যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে পারমাণবিক আলোচনা থমকে যায়। ওই সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রও জড়িয়ে পড়ে এবং ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায়। যুদ্ধের আগে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পাঁচ দফা পারমাণবিক আলোচনা হয়েছিল। আলোচনার বড় বাধা ছিল ইরানের মাটিতে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ—যা পশ্চিমা দেশগুলো অস্ত্রায়নের ঝুঁকি কমাতে পুরোপুরি বন্ধ করতে চায়, কিন্তু তেহরান তা স্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান করে আসছে। 

এদিকে গত সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে জাতিসংঘ ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে পুনরায় অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা ও অন্যান্য নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করে। ইউরোপীয় শক্তিগুলোর উদ্যোগে ‘স্ন্যাপব্যাক’ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, যদিও রাশিয়া ও চীন এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে। ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানি অভিযোগ করে যে, ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তির শর্ত ইরান লঙ্ঘন করেছে—এই অভিযোগের ভিত্তিতেই তারা স্ন্যাপব্যাক প্রক্রিয়া শুরু করে। ওই চুক্তির লক্ষ্য ছিল ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির পথ থেকে বিরত রাখা। তবে ইরান বরাবরের মতোই পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে এবং বলছে, তাদের কর্মসূচি সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে পরিচালিত।

২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তিটি সে বছর গৃহীত জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের একটি প্রস্তাবের মাধ্যমে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এরপর থেকে চুক্তির বাস্তবায়ন নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদ বছরে দুবার বৈঠক করে আসছে। মঙ্গলবারের বৈঠক আহ্বান করে ব্রিটেন, ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র, ডেনমার্ক, গ্রিস, স্লোভেনিয়া ও দক্ষিণ কোরিয়া। তবে রাশিয়া ও চীন দাবি করে, ওই প্রস্তাবের সব বিধান ১৮ অক্টোবরেই মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে এবং তারা বৈঠক আয়োজনের বিরোধিতা করে। আপত্তি সত্ত্বেও বৈঠকটি নির্ধারিত সময়েই অনুষ্ঠিত হয়।

 

কিউএনবি/খোরশেদ/২৪ ডিসেম্বর ২০২৫,/দুপুর ২:৫০

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

December 2025
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৬
IT & Technical Supported By:BiswaJit