স্পোর্টস ডেস্ক : এবারের বিপিএল নিলামে একমাত্র কোটিপতি হলেন নাঈম শেখ। তার কারণ আছে অবশ্য, ঘরোয়া ক্রিকেটে যে তিনি রীতিমতো ‘ব্র্যাডম্যান’! তবে এরপরও জাতীয় দলে এলেই তার রানের ফোয়ারা যায় ফুরিয়ে। এর ব্যাখ্যা এবার তিনি দিয়েছেন। নাঈম শেখ জানালেন ৩ কারণে তিনি জাতীয় দলে পারফর্ম করতে পারছেন না, এবং সেই দুই কারণের ওপর নিয়ন্ত্রণও তার হাতে নেই।
তবে তার আগে তার ব্যাট ঘরোয়া ক্রিকেটে অন্তত হেসেছে নিয়মিতই। গেল বছর এনসিএলে ৪৭১ রান করে তিনি ছিলেন শীর্ষ দশে। সে বছর এনসিএলে ৩১৬ রান করে বনেছেন সেরা ব্যাটার। ২০২৪ ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে ৬১৮ রান করে ছিলেন শীর্ষ তিন ব্যাটারের একজন। সবশেষ বিপিএলে ৫১১ রান করে তিনি ছিলেন সবার সেরা। চলমান এনসিএলে ৬ ইনিংসে ৪৬৪ রান করে আছেন শীর্ষ ব্যাটারদের তালিকায় ৪ নম্বরে। সব মিলিয়ে এই পরিসংখ্যান সাক্ষ্য দিচ্ছে তার ধারাবাহিকতার দিকেই।
এরপরও অবশ্য জাতীয় দলে এলে তিনি রান করতে পারছেন না। প্রায় তিন বছর পর দলে ফিরে নাঈম রান করেছিলেন যথাক্রমে ৩২, ৩ ও ১০। এরপর ‘এ’ দলের সঙ্গে তিনি গিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ায়। সেখানেও তিনি রান পাননি। ছয় ইনিংসে তার সংগ্রহ ৯৪ রান, গড় ১৫.৬৬, স্ট্রাইক রেট ১২২.০৭। বাউন্ডারি মাত্র ১৩টি, ছক্কা একটি। এরপরও অবশ্য ওয়ানডেতে ডাক পেয়েছিলেন, সেখানেও তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। আফগানিস্তান সিরিজে এক ম্যাচ খেলে করেছেন ২৪ বলে ৭ রান।
নাঈম এর দায় দিয়েছেন নির্বাচকদের ওপর। তার অভিমত, ছন্দে থাকার সময় দলে সুযোগ পাচ্ছেন না তিনি। যুগান্তরকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘আমি আট বছর ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগ খেলেছি। সব মৌসুমেই আমার রান উপরের দিকেই ছিল। সব জায়গায় পারফর্ম করেই আমি দলে জায়গা পেয়েছি। হিসাব করে দেখবেন ঢাকা লিগে আমি ৫০০ রানের কমে কোনো মৌসুম শেষ করিনি। সব জায়গায় প্রভাব বিস্তার করেই জায়গা পেয়েছি। কিন্তু সবারই পারফর্ম করার সময় থাকে। সেই সময় খেলানো উচিত।’
জাতীয় দলে ফিরে অবশ্য তিনি খেলেছেন ৪ নম্বরে। রান করতে না পারার দ্বিতীয় কারণ হিসেবে দাঁড় করিয়েছেন তিনি একে। তার কথা, ‘দীর্ঘদিন পর জাতীয় দলে সুযোগ পেয়ে আমি চার নম্বরে ব্যাট করেছি। অথচ, আমি রান করেছি কিন্তু ওপেনিংয়ে। ওই জায়গায় (চারে) আমি অভ্যস্ত নই। আর যখন সব জায়গায় টানা ভালো খেলেছি, তখন সুযোগ পাইনি। সবারই পিক টাইমে পারফর্ম করার সুযোগ থাকে বেশি।’
এছাড়া মিরপুরের উইকেটকেও তিনি দায় দিয়েছেন অনেকটাই। তার কথা, ‘আমি টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের অধিকাংশ ম্যাচ খেলেছি মিরপুরে। আমরা সবাই জানি মিরপুরের ব্যাটিং দিয়ে কোনো ব্যাটারকে পরখ করা যাবে না। এখানে কেমন উইকেট হয়, সবাই জানি। যদি ভারত-পাকিস্তানের মতো ভালো উইকেটে খেলে পারফর্ম করতে পারতাম না, তখন আলাদা হিসাব হতো।’
জাতীয় দলে এসে তিনি ৪ ম্যাচ খেলেছেন চলতি বছর। তবে এরপরই দল থেকে বাদ পড়তে হয়েছে। নাঈম জানালেন, ভালো করতে হলে অন্তত টিম ম্যানেজমেন্টের আস্থাটা কাঁধের ওপর থাকতে হয়। তিনি বলেন, ‘ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলার সময় কোচ আমাকে কিছু বলেন না। কারণ, তারা জানেন আমি পারফর্ম করবই। সেট হতে পারলে ম্যাচ বের করব।
ম্যাচ জেতাব। জাতীয় দলেও এমনটা হওয়া উচিত। আমার ওপর যেভাবে বিশ্বাস রাখা হবে, পারফর্মটাও সেভাবে বের হয়। বিশ্বাস না করতে পারলে নিজের ওপরও আস্থা থাকে না। এসব ক্ষেত্রে অধিনায়ক ও কোচের বড় ভূমিকা থাকে। দুই ম্যাচ খেলে বাইরে চলে গেলাম, এরকমটা করলে হয় না। হয়তো আমার ভাগ্যটাও ভালো নয়।’
কিউএনবি/আয়শা/০৫ ডিসেম্বর ২০২৫,/রাত ৮:০৫