বৃহস্পতিবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:০৫ অপরাহ্ন

তরুণীর প্রেমের টানে চীনা যুবক বাংলাদেশে

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই, ২০২৫
  • ৪৫ Time View

ডেস্ক নিউজ : মাদারীপুরের খেয়াঘাটের মাঝির মেয়ে সুমাইয়া আক্তারের প্রেমের টানে চীনের নাগরিক সিতিয়ান জিং নামের এক যুবক বাংলাদেশে এসেছেন। বিয়ে করে বর্তমানে তিনি মাদারীপুরে শ্বশুরবাড়িতেই আছেন। এদিকে ভিনদেশি নাগরিককে এক নজর দেখার জন্য ওই বাড়িতে ভিড় করছেন লোকজন।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর সদর উপজেলার পাঁচখোলা ইউনিয়নের উত্তর মহিষেরচর এলাকার বাসিন্দা আড়িয়াল খাঁ নদে খেয়াঘাটের মাঝি সাইদুর মুন্সি ও ইয়াসমিন বেগমের মেয়ে সুমাইয়া আক্তার (১৯)।

সুমাইয়া মাদারীপুর শহরের সরকারি সুফিয়া মহিলা কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। তারা তিন বোন। সুমাইয়া বড়, মেজো বোন সাদিয়া আক্তার (১২) মাদ্রাসায় পড়ে, ছোট বোন আরিফা (৬)। বাবা সাইদুর মুন্সি একই এলাকায় নদীতে নৌকা চালিয়ে মানুষজন পারাপার করে সংসার চালান।

এদিকে চীনের সাংহাই শহরের বাবা সি জিং নিং ও মা ওয়াং ইংয়ের ছেলে সিতিয়ান জিং (২৬)। তারা দুই ভাই। বড় সিতিয়ান জিং, তার চীনের সাংহাই শহরে রেস্টুরেন্টের ব্যবসা আছে। প্রথমে সুমাইয়া এই সিতিয়ান জিংয়ের টিকটক দেখেন। এরপর ইউটার্চের মাধ্যমে কথা আদান প্রদান হয়। উভয়ই সফটওয়্যারের মাধ্যমে লেখা অনুবাদ করে মনের ভাব আদান প্রদান করেন।

একপর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক হয়। মাত্র চার মাসের প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে গত ২৪ জুলাই চীন থেকে বাংলাদেশ আসেন সিতিয়ান জিং। এরপর একদিন ঢাকার একটি হোটেলে থাকেন। ২৬ জুলাই মাদারীপুর মহিষেরচরে সুমাইয়ার বাড়িতে আসেন। সুমাইয়াসহ তার বাবা সাইদুল মুন্সি ও তার দুইজন আত্মীয় মিলে ঢাকা থেকে সিতিয়ান জিংকে মাদারীপুরে নিয়ে আসেন। বাংলা ভাষায় কথা বলতে না পারায় মোবাইলে অনুবাদ করে কথা আদান-প্রদান করেন সিতিয়ান জিং। এরপর ২৭ জুলাই তারা বিয়ে করেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে সুমাইয়ার বাড়িতে আশপাশের মানুষসহ দূর-দূরান্ত থেকে ভিড় করতে থাকেন।

সুমাইয়া আক্তার বলেন, টিকটক দেখে আমি ওর ভক্ত হই। এরপর ইউটার্চের মাধ্যমে কথা হয়। পরে দুজনেই প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ি; কিন্তু মাত্র চার মাসের প্রেমের সূত্রে ধরে চীন থেকে বাংলাদেশে আমার কাছে চলে আসবে, তা কখনও ভাবিনি। ও প্লেনে উঠার সময় বলেছে আমি বাংলাদেশে আসতেছি; কিন্তু আমি বিশ্বাস করেনি। যখন ইন্ডিয়া এসে আমাকে জানায়, তখন বিশ্বাস করেছি। ওর মা-বাবাকে আমার কথা বলেছে। ওরাও মুসলিম। ওর মা বলেছেন আমাকে বিয়ে করে চীনে নিয়ে যেতে। তাই সিতিয়ান জিং বাংলাদেশে এসে আমাকে বিয়ে করেছেন। এরই মধ্যে পাসপোর্ট করতে দিয়েছি। ও এক মাস বাংলাদেশে থাকবে। এরই মধ্যে আমার সব কাগজপত্র রেডি করা হবে। তারপর ও আমাকে চীনে নিয়ে যাবে। আমিও চীনে যাবার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি।

সিতিয়ান জিং বলেন, বাংলাদেশ আমার ভালো লেগেছে। তবে অনেক গরম। আর অনেক মানুষ আমাকে দেখতে আসে, তাই আমার ভয় লাগে। আমি ভালোবেসে চীন থেকে এখানে এসেছি। সুমাইয়াকে বিয়ে করেছি। এখন ওর কাগজপত্র রেডি করে চীনে নিয়ে যাব। আমার পরিবার সব জানে। তারাই সুমাইয়াকে চীনে নিয়ে যেতে বলেছেন। সুমাইয়ার বাবা সাইদুল মুন্সি বলেন, আমার মেয়ের সঙ্গে চীনের নাগরিক সিতিয়ান জিংয়ের মোবাইলে প্রেম হয়। এরপর সে বাংলাদেশে এসে আমার মেয়েকে বিয়ে করে। এখন সে আমাদের এখানেই আছে। ও খুব ভালো। খুবই অমায়িক। কোনো অহংকার নেই। এক মাস থাকবে এবং আমার মেয়েকে নিয়ে যাবে। এতে আমরা খুব খুশি।

প্রতিবেশী জুলেখা বেগম বলেন, আমরা আগে কখনও সামনাসামনি চীনের মানুষ দেখিনি। সুমাইয়ার জন্য তা দেখতে পেলাম। সুমাইয়াকে ভালোবেসে ওই ছেলে চীন থেকে এসেছেন। বাংলা কথা বলতে পারেন না। তবুও আমাদের সঙ্গে হেসে হেসে কথা বলেন। মনে হচ্ছে ছেলেটি ভালো হবে। আর শুনলাম সুমাইয়াকেও চীনে নিয়ে  যাবে। আসলে এমন ঘটনা আমাদের এলাকায় আর ঘটেনি। এমন ঘটনায় এলাকার মানুষ খুব খুশি।

পাঁচখোলা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) মো. রুবেল হাওলাদার বলেন, কয়েক দিন আগে চীন থেকে এক ছেলে এখানে এসেছেন। তার সঙ্গে আমাদের এলাকার সুমাইয়ার বিয়ে হয়। প্রথমে কোর্টের মাধ্যমে বিয়ে হয়েছে। পরে সামাজিকভাবে গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে বিয়ে হয়। শুনেছি চীনের ওই ছেলের ব্যবসা আছে। কিছুদিনের মধ্যেই সুমাইয়াকেও চীনে নিয়ে যাবে।

 

কিউএনবি/আয়শা/২৯ জুলাই ২০২৫,/রাত ৯:৫৮

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

December 2025
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৬
IT & Technical Supported By:BiswaJit