মঙ্গলবার, ০৩ জুন ২০২৫, ০১:৩৭ পূর্বাহ্ন

‘চোখের সামনে যাকে পেয়েছি, তাকেই মেরেছি’

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ৮ এপ্রিল, ২০২৫
  • ৭২ Time View

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা যেন ধংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। ইসরায়েলি সেনাদের চালানো বর্বর গণহত্যার এক বিবরণ ওঠে এসেছে সম্প্রতি। পরিচয় গোপন করে নিজেদের অপরাধের স্বীকারোক্তি দিয়েছে কয়েকজন ইসরায়েলি সেনা। খবর দ্য সাইলেন্স এবং এপির।

তাদের বিবরণে, ‘যতদূর চোখ গিয়েছে, চোখের সামনে যা কিছু পেয়েছে, ধ্বংস করা হয়েছে। যেখানেই কোনো ধরনের নড়াচড়া চোখে পড়েছে, গুলি করে তা স্তিমিত করে দেওয়া হয়েছে। ফিলিস্তিনিরা যেন আর কোনোদিনই এখানে ফিরতে না পারেন, সেই ব্যবস্থাই করেছে সেনারা।’

স্থানীয় সময় সোমবার (৭ এপ্রিল) ব্রেকিং দ্য সাইলেন্সের এক প্রতিবেদনে বাফার জোনে থাকা কয়েকজন সেনার স্বীকারোক্তি নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। দখলবিরোধী এই ভেটেরান্স গ্রুপের প্রতিবেদনে জানা গেছে, গাজার ভূমি দখল করার জন্য ইচ্ছাকৃতভাবেই গাজাকে এভাবে ধ্বংস করেছে ইসরায়েল প্রশাসন।

শুধু তাই নয় বাফার জোনকে ফিলিস্তিনিদের হত্যা করার ‘কিলিং জোনে’ পরিণত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলের ট্যাঙ্ক স্কোয়াডে থাকা এক সেনা কর্মকর্তা। ট্যাঙ্কগুলোর ৫০০ মিটারের মধ্যে কেউ এলেই তাকে গুলি করা হত, হোক সে নারী বা শিশু! হতভাগ্য ফিলিস্তিনিরা জানেনও না ঠিক কোন পর্যন্ত এই বাফার জোনের বিস্তৃতি। না জেনেই হয়তো প্রবেশ করে ফেলেন মরণ ফাঁদে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই সেনা বলেন, ‘২০২৩ সালের অক্টোবরে তারা (হামাস যোদ্ধারা) আমাদের মেরেছে, তাই আমরা তাদের মারতে এসেছি। কিন্তু এখানে এসে দেখছি, আমরা শুধু তাদের নয়, তাদের স্ত্রী, সন্তান, কুকুর, বিড়াল সব কিছুই মারছি।’

ওই সেনাদের মধ্যে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এসোসিয়েট প্রেসকে (এপি) সাক্ষাৎকার দেন ৫ জন। এপির খবরে সেনাদের বয়ানে দখলদার ইসরায়েলের ভয়াবহতার এক অসহনীয় চিত্র উঠে আসে। তারা বলেন, ২০২৩ সালে হামাসের হামলার পর নিজ দেশের সুরক্ষা নিশ্চিত করতেই তারা এখানে যুদ্ধ করতে এসেছে।

এপির খবরে ওই পাঁচ সেনা জানান, বাফার জোনের ফসলের মাঠ, সেচের পাইপ, শস্য, গাছপালা, সরকারি-বেসরকারি স্থাপনাগুলো ধ্বংসের জন্য ইসরায়েল প্রশাসন থেকে বিশেষ নির্দেশ পেয়েছিলেন তারা। যাতে সেখানে হামাসের কোনো যোদ্ধা লুকিয়ে থাকার সুযোগ না পান। সেনারা জানান, তারা এত পরিমাণ স্থাপনা ধ্বংস করেছে, তা গুনেও বলতে পারবেন না।

ইসরায়েলি সেনারা গাজার যে অংশে বাফার জোন তৈরি করেছে, সেটি এক সময় লাখ লাখ ফিলিস্তিনির পদচারণায় মুখরিত ছিল। গাজার কৃষিকাজের জন্য এই ভূমি ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

স্যাটেলাইটের মাধ্যমে দেখা যায়, ওই এলাকাগুলোর কিছুই আর অবশিষ্ট নেই। পুরোপুরি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে বাফার জোন। যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেঙে গত ১৮ মার্চ নতুন করে গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করলে বাফার জোনে অতিরিক্ত আরও সেনা মোতায়েন করে ইসরায়েল।

কিউএনবি/আয়শা/০৮ এপ্রিল ২০২৫,/রাত ৯:৫০

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

June 2025
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit