রবিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৫, ১০:২৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
দুবাই ক্যাপিটালসে ডাক পেলেন মুস্তাফিজ রাঙামাটিতে মাছের ট্রাকে পাঁচারকালে বস্তাভর্তি ভারতীয় সিগারেট জব্দ নিরাপত্তা ও সম্প্রীতির কাজে নিবেদিত বিজিবির বিরুদ্ধে মিথ্যা ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত অপপ্রচারের প্রতিবাদ।  আটোয়ারীতে ‘মানিকপীর সোনালী কিন্ডার গার্টেন’-এর কৃতি শিক্ষার্থীদের মাঝে বৃত্তি ও সনদ বিতরণ শিক্ষকরা হচ্ছে যুগ পরিবর্তনের কারিগর–ফজলে হুদা বাবুল তারুণ্যের মুখোমুখি জামায়াত প্রার্থী ব্যারিস্টার সালেহী ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট বলসোনারো গ্রেফতার প্রিন্সেস ডায়ানার সেই রিভেঞ্জ ড্রেসের মূল্য এখন ৬ লাখ ডলার হাসিনার মৃত্যুদণ্ড নিয়ে এবার মুখ খুলল পাকিস্তান বাভুমার অসাধারণ কীর্তির পরও চাপের মুখে প্রোটিয়ারা

‘আমি এত বড় পদক পাব কল্পনা করিনি, এখন মরেও শান্তি পাব’

Reporter Name
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
  • ১০৪ Time View

ডেস্ক নিউজ : এবার সমাজসেবা ক্যাটাগরিতে একুশে পদকের জন্য মনোনীত হয়েছেন জিয়াউল হক। তার বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলার মুসরিভূজা বটতলা গ্রামে। তিনি ফেরি করে দই বিক্রি করেন। সেই আয়ে সংসার চালানোর পর উদ্বৃত্ত টাকা দিয়ে বই কিনে তিনি গরিব ছাত্রদের মধ্যে বিলি করেন। মঙ্গলবার বিকালে সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো সম্মতিপত্রে জিয়াউল হকের মনোনয়নের বিষয়টি প্রকাশ করা হয়। চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেলা প্রশাসক একেএম গালিভ খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বুধবার সকালে মুসরিভূজা বটতলা গ্রামে গিয়ে জানা যায়, জিয়াউল হক পাশের গোমস্তাপুর উপজেলা সদর রহনপুর স্টেশনবাজারে দই বিক্রি করতে গেছেন। বাড়িতে তখন শুভাকাঙ্ক্ষীদের ভিড়। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রহনপুর স্টেশনবাজারে গিয়ে দেখা যায়, একটি ওষুধের দোকানের সামনে বসে দই বিক্রিতে ব্যস্ত জিয়াউল হক। এ সময় জিয়াউল হক বলেন, দই ও ক্ষীর নিয়ে আমি সকাল ৭টায় বের হয়েছি। কেননা চাল কেনা ও বাজার করার টাকা ছিল না। আমি কল্পনা করতে পারিনি, যে আমি এত বড় একটা পদক পাওয়ার জন্য মনোনীত হব। জীবনের শেষ দিকে এসে কাজের স্বীকৃতি পেলাম। এখন মরেও শান্তি পাব। কী যে আনন্দ পেয়েছি, তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না।

জিয়াউল হক জানান, ১৯৫৫ সালে তিনি পঞ্চম শ্রেণি পাস করে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হতে চান। কিন্তু বাড়ি বাড়ি গরুর দুধ দহন করে জীবিকা নির্বাহ করা বাবা বই কেনার জন্য দেড় টাকা দিতে পারেননি। উচ্চবিদ্যালয়েও ভর্তি হওয়া হয়ে ওঠেনি আর। এর পর বাবার সংগ্রহ করা দুধ দিয়ে দই তৈরি করে ফেরি করে বিক্রি করা শুরু করেন। দু–তিন বছর পর কিছু টাকা জমা হয় জিয়াউল হকের হাতে। তখন জিয়াউল হকের চিন্তা হয়, যারা তার মতো টাকার অভাবে বই কিনতে না পেরে লেখাপড়া থেকে ছিটকে পড়তে পারে, তাদের তিনি এই টাকা দিয়ে বই কিনে দেবেন। তবেই তার বিদ্যালয়ে পড়তে না পারার বেদনা লাঘব হবে। গরিব ছাত্রদের মধ্যে বই বিলি শুরু করেন। যত দিন পর্যন্ত সরকার বই বিনামূল্যে দেওয়া শুরু করেনি, ততদিন পর্যন্ত বই দিতে থাকেন। 

এর পর উচ্চমাধ্যমিক ও স্নাতক শ্রেণির ছাত্রদের বই দিতে থাকেন জিয়াউল। তার দেওয়া বই পড়ে ও আর্থিক সহায়তা পেয়ে অনেকেই স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করে চাকরি করছেন। শুধু তা–ই নয়, দই বিক্রি করা টাকায় বইয়ের ভান্ডার গড়ে তোলেন। ১৯৬৯ সালে নিজের বাড়ির একটি ঘরে প্রতিষ্ঠা করেন ‘জিয়াউল হক সাধারণ পাঠাগার’। এ পাঠাগারে এখন ১৪ হাজার বই আছে বলে জানান জিয়াউল হক। পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি গল্প, উপন্যাস ও প্রবন্ধের বইও আছে পাঠাগারে। সব বই রাখার স্থান না হওয়ায় সেই বইগুলো আছে পাশের মুসরিভূজা ইউসুফ আলী হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজসহ আশপাশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাঠাগারে।

এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মঙ্গলবার রাত থেকেই খবরটি ছড়াতে থাকে। মো. জিয়াউল হক একুশে পদকের জন্য মনোনীত হওয়ায় গ্রামের মানুষ, আত্মীয়স্বজন ও শুভানুধ্যায়ীদের মধ্যে আনন্দ ছড়িয়ে পড়ে। বুধবার সকাল থেকে শুভাকাঙ্ক্ষীরা তার বাড়িতে ভিড় জমান, অভিনন্দন জানাতে সঙ্গে নিয়ে আসেন ফুলের তোড়া। কিন্তু জীবিকার তাগিদে তখন দই বিক্রি করতে বেরিয়েছেন ৯০ বছর বয়সি জিয়াউল হক।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৪,/বিকাল ৫:৫২

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

November 2025
M T W T F S S
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৬
IT & Technical Supported By:BiswaJit