লাইফ ষ্টাইল ডেস্ক : শীতকাল মূলত পাতা ঝরার মৌসুম হলেও প্রকৃতির রূপের ডালিতে কিছু কমতি থাকে না। কিন্তু সৌন্দর্য যেন উবে যায় মানুষের ত্বক আর চুল থেকে। আসলে, আমাদের ত্বক, চুল বাতাসের জলীয় কণা শুষে নিয়ে উজ্জ্বলতা ও কোমলতা বজায় রাখে।
আর তাই তাপমাত্রা আর বাতাসে আর্দ্রতা কমলে ত্বক, চুলও শুষ্ক, প্রাণহীন হয়ে যায়। চুলের ডগা ফাটে, খসে পড়ে। মৃত কোষ জমে স্ক্যাল্পে। ঠোঁট-গোড়ালি ফাটে। অনেক কিছু করেও যেন এই সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া যায় না।
শীতের কবল থেকে ত্বক ও চুল উদ্ধার করতে রইল কিছু টিপস।
১. ক্লেনজ়িং, টোনিং, ময়শ্চারাইজ়িং-এর রূপরুটিনে সামান্য বদল আনুন। বারবার মুখ না ধুয়ে গোসলের সময় এক বার আর রাতে বাড়িতে ফিরে এক বার মাইল্ড ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন। বাকি সময় তুলোয় মাইল্ড ক্লিনজ়িং লোশন নিয়ে মুখ পরিষ্কার রাখুন। ক্রিম বেসড হেভি ময়শ্চারাইজ়ার লাগান।
২. রোমকূপে শীতের ধুলোময়লা আটকে গেলে ত্বকের সমস্যা বাড়ে। তাই সপ্তাহে দুই-তিন বার স্ক্রাব করুন। এতে ত্বকের মৃত কোষ উঠে যাবে, রক্ত সঞ্চালন ঠিক থাকবে। আপনাকে তরুণ দেখাবে। কিন্তু অতিরিক্ত স্ক্রাব করবেন না। নয়তো ত্বকের উপরের যে স্তরটি নানা দূষণ থেকে ত্বককে বাঁচিয়ে রাখে, সেটি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
৩. রাসায়নিকে ভরা প্রসাধনী থেকে দূরে থাকুন। শীতে ত্বক বেশি স্পর্শকাতর হয়ে পড়ে। এই ধরনের প্রসাধনী থেকে ত্বকে অ্যালার্জি, লাল ভাব দেখা দিতে পারে। এমন কিছু হলে আক্রান্ত অংশে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে কর্টিজ়োন ক্রিম লাগাতে পারেন। দ্রুত সমাধান হবে।
৪. গ্লিসারিন, শিয়া বাটার, জলপাই তেল থেকে প্রস্তুত সাবান মেখে ঈষদুষ্ণ পানিতে গোসল করুন। গোসলের পর সারা শরীরে তেল বা ভারি বডি লোশন লাগাবেন। অয়েল মাসাজ করে গোসল করতে চাইলে, গায়ের পানি মাইক্রোফাইবার যুক্ত তোয়ালে দিয়ে শুষে নিন। একটু জলীয় ভাব শরীরে লেগে থাকা অবস্থায় বি-ওয়াক্স, অ্যাপ্রিকট অয়েল, কোকো বাটার ইত্যাদি উপাদানে সমৃদ্ধ বডি লোশন ব্যবহার করুন। ত্বকের আর্দ্রতা, কমনীয়তা ফিরে আসবে। দিনের বেলা অবশ্যই সানস্ক্রিন ব্যবহার করবেন।
৫. মধু ও চিনির স্ক্রাব দিয়ে ঠোঁটের মৃত কোষ তুলে ফেলুন। আমন্ড অয়েল যুক্ত লিপ বাম ব্যবহার করুন। স্মাজপ্রুফ লিপস্টিক লাগালে রাতে শোয়ার আগে ভাল করে পরিষ্কার করবেন। এতেই ঠোঁট মখমলি থাকবে।
৬. পায়ের গোড়ালির যত্ন নিন। নিয়মিত পেডিকিয়োর করুন। সম্ভব না হলে গরম পানিতে পায়ের পাতা ডুবিয়ে রেখে ফুট স্ক্রাব দিয়ে পা পরিষ্কার করুন। তার পর পেট্রোলিয়াম জেলি লাগিয়ে মোজা পরে থাকুন।
১. খুশকি, চুল পড়ার উপদ্রব দূর করতে চুল ধুয়ে ভাল করে শুকিয়ে নিতে হবে। তার পর ক্রিমি কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। কন্ডিশনার লাগান চুলের মাঝামাঝি অংশ থেকে ডগা পর্যন্ত।
২. সপ্তাহে এক দিন চুলে নারকেল তেল ও জলপাই তেল মিশিয়ে মাসাজ করে আধ ঘণ্টা পর চুল ধুয়ে নিন। এতে চুলের ফলিকল মজবুত হবে, সহজে ঝরবে না। অন্য আর এক দিন ভাল কোনও হেয়ার মাস্ক বা ডিম ও মধুর প্যাক ব্যবহার করুন। ডিপ কন্ডিশনিং হয়ে যাবে।
৩. ভিজে চুল বাঁধবেন না। কোথাও বের হওয়ার আগে গোসল করতে হলেও হাতে সময় রাখবেন, যাতে চুল সম্পূর্ণ শুকিয়ে যায়। শুকনো চুল প্রতি ঘণ্টায় আঁচড়ে নেওয়া উচিত।
৪. বেড়াতে গেলে বা পিকনিকে স্কার্ফ, উইন্টার ক্যাপ দিয়ে চুল ঢেকে রাখুন। দূষণ থেকে রক্ষা পাবে চুল। তবে হ্যাট বা ক্যাপ স্টাইলিং-এ চুলের বাউন্স অনেক সময় হারিয়ে যায়। টুপি খোলামাত্র চুল শুকনো, উসকোখুসকো হয়ে যায়। তাই এমন ক্যাপ বাছুন যার ভিতরের অংশে স্যাটিন বা অন্য নরম কাপড়ের স্তর রয়েছে। এতে চুল ঠিক থাকবে।
৫. এই ঋতুতে হিট স্টাইলিং কম করানোই ভাল। উৎসব-অনুষ্ঠানে স্টাইলিং করাতে চাইলে প্রোটেক্টর স্প্রে ও প্রাইমার ব্যবহার করবেন। দু’মাস অন্তর চুল ট্রিম করালে ডগা ফাটার সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে।
কিউএনবি/অনিমা/২৪ ডিসেম্বর ২০২৩,/রাত ১০:১৯