ডেস্ক নিউজ : বাংলাদেশ পুলিশের ৪০তম ক্যাডেট এসআই পদে সদ্য চূড়ান্ত সুপারিশ পাওয়া সুকেন বিশ্বাস (২৭) ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। দরিদ্র পরিবারের সংগ্রামী সুকেন পড়াশোনার পাশাপাশি পরিবারকে সহায়তা করতে একটা গার্মেন্টসে সিনিয়র অপারেটর হিসেবে কাজ করতেন।
মৃতের সুকেনের চাচাতো ভাই অমিত বিশ্বাস বলেন, সুকেনের বাবা একজন ফেরিওয়ালা। গ্রামে গ্রামে ফেরি করে চুড়ি-বয়লা, শিশু ও মহিলাদের জন্য বিভিন্ন প্রসাধনী সামগ্রী বিক্রি করেন। সুকেন ছোটবেলা থেকেই দারিদ্র্যের সঙ্গে যুদ্ধ করে এসেছে। ২০১১ সালে গোয়ালন্দ প্রপার হাইস্কুল হতে এসএসসি পাশ করে রাজবাড়ী সরকারি কলেজে এইচএসসিতে ভর্তি হয়। সেখান থেকে ২০১৩ সালে এইচএসসি পাশ করে গাজীপুরের টঙ্গী সরকারি কলেজে অনার্সে ম্যানেজমেন্ট শাখায় ভর্তি হয়। তখন থেকেই সে একটি গার্মেন্টসে চাকরি নেয়। চাকরির পাশাপাশি নিজের পড়াশোনা ও পরিবারের খরচ সে নিজেই জোগাত। পরিবারে তার বাবা-মা এবং দুই ভাই ও এক বোন রয়েছে। সে গাজীপুরের টঙ্গী সরকারি কলেজ থেকে অনার্স শেষ করে চাকরির যুদ্ধে নামে। চলতি বছরে একই কলেজ থেকে মাস্টার্স শেষ করে।
তিনি জানান, সুকেন গত এক সপ্তাহ ধরে জ্বরে আক্রান্ত ছিল কিন্তু বাড়িতে কোনো কিছু জানায়নি। গত তিন দিন যাবত জ্বরের সাথে বমি ও ডায়রিয়া হয়। তার রুমমেটরা তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়। অবস্থার অবনতি হলে রাত ১টার দিকে তাকে উত্তরা ক্রিসেন্ট হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।মৃত্যুর কারণ হিসেবে উত্তরা ক্রিসেন্ট হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের জানান, পানিশূন্যতা ও রক্তের প্লাটিলেট কমে যাওয়ায় তার মৃত্যু হয়েছে। তার শরীরে ডেঙ্গুর লক্ষণ হিসেবে জ্বর, বমি ও ডায়রিয়া ছিল।
গোয়ালন্দ প্রপার হাইস্কুলের সহকারী শিক্ষক ও স্থানীয় বাসিন্দা জীবন চক্রবর্তী বলেন, সুকেন তাদের বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র ছিল। ছোটবেলা হতেই সে অনেক মেধাবী, সংগ্রামী ও ভালো ছেলে হিসেবে সবার কাছে পরিচিত ছিল। সে জীবনে অনেক কষ্ট করে একটা সাফল্যের প্রান্তে পৌঁছেছিল। পুলিশে চাকরি হয়েছিল কিন্তু সে ও তার হতভাগ্য বাবা-মায়ের কপালে তা সইল না। তাদের একটু সুখের নাগাল পাওয়া হলো না। তার এ আকস্মিক মৃত্যুতে পরিবারসহ গোটা এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
কিউএনবি/আয়শা/১৫ অক্টোবর ২০২৩,/রাত ৮:১৫