শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ১১:২৯ পূর্বাহ্ন

মনিরামপুরে গৃহবধুর ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার স্বামী শশুর-শাশুড়িসহ ৪ জন হেফাজতে

স্টাফ রিপোর্টার,মনিরামপুর(যশোর) ।
  • Update Time : রবিবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩
  • ১১৪ Time View

স্টাফ রিপোর্টার,মনিরামপুর(যশোর) : যশোরের মনিরামপুরে পিতা-মাতার অমতে ভালবেসে বিয়ের এক বছর পার হতে না হতেই স্বামীর বাড়ি থেকে রোববার দুপুরে গৃহবধু বারিশার মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। অভিযোগ উঠেছে পারিবারিক কলহকে কেন্দ্র করে বারিশাকে মারপিটের পর শ্বাসরোধে হত্যার পর গলায় দড়ি দিয়ে সিলিংফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে রেখে এলাকার প্রচার করা হয় আত্মহত্যার। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ নিহতের স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়িসহ চারজনকে হেফাজতে নিয়েছে। তবে এর মধ্যে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সন্ধ্যার তিনজনকে ছেড়ে দেওয়া হলেও স্বামীকে থানা হাজতে রাখা হয়েছে। গতকাল ময়না তদন্ত শেষে সন্ধ্যায় বরিশার মৃতদেহ তার পিতা যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের মর্গ থেকে গ্রহন করেন। নিহত নওয়াল জামান বরিশা(১৯) উপজেলার নেহালপুর ইউনিয়নের পাঁচাকড়ি গ্রামের আজমত ফকিরের ছেলে মাদ্রাসা ছাত্র আরশিল কবিরের স্ত্রী।

এলাকাবাসী ও পুলিশ জানায়, মাদ্রাসা ছাত্র আরশিল কবির এবং যশোর সদর উপজেলার ফতেপুর-ছাতিয়ানতলা গ্রামের কলেজ শিক্ষক মাহাবুবুর রহমান সবুজের স্কুল পড়–য়া মেয়ে নওয়াল জামান বরিশা ভালবেসে একবছর আগে বিয়ে করেন। কিন্তু অপ্রাপ্ত বয়সসহ বিভিন্ন কারনে এ বিয়েতে বরিশার পিতা-মাতার মত ছিলনা। ফলে তারা মেয়েকে উদ্ধারের জন্য থানায় অভিযোগ করেন। নেহালপুর ফাড়ির ইনচার্জ এসআই আতিকুজ্জামান জানান, অপ্রাপ্ত বয়স হওয়ায় বিয়ের তিনমাস পর স্বামীর বাড়ি থেকে বরিশাকে উদ্ধার করে তার পিতা-মাতার জিম্মায় দেওয়া হয়। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই বরিশা পিতা-মাতার কাছ থেকে পালিয়ে আবার স্বামীর বাড়িতে চলে আসে। ফলে অভিমান করে বরিশার পিতা-মাতা আর কখনও তার খোজখবর নেননি।

তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেশ কয়েকজন প্রতিবেশিরা জানান, শনিবার রাত সাড়ে ১১ টারদিকে বাড়িতে খাবার সময় পারিবারিক বিভিন্ন বিষয়াদি নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। কথাকাটাকটির এক পর্যায়ে আরশিল কবির স্ত্রী বরিশাকে মারপিট করে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। তবে মারপিটের অভিযোগ অস্বীকার করে আরশিল জানান, রাত একটার দিকে তিনি বাড়িতে গিয়ে ঘরের মধ্যে সিলিংফ্যানের সাথে স্ত্রীকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। এ সময় বরিশাকে উদ্ধারের পর গ্রামের পল্লী চিকিৎসক আলাউদ্দিনের কাছে নেওয়া হয়। এ সময় পল্লী চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। তবে স্বামী আরশিলের দাবি তার স্ত্রী ফ্যানের সাথে গলায় ওড়না পেচিয়ে আত্মহত্যা করে। পুলিশ খবর পেয়ে রোববার দুপুর ১২ টারদিকে গৃহবধুর মরদেহ উদ্ধার করে।

এসআই আতিকুজ্জামান জানান, নিহতের কান এবং মুখসহ বিভিন্ন স্থানে ক্ষতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। ফলে বরিশার মৃত্যু স্বাভাবিক না হওয়ায় মরদেহ উদ্ধারের পর ময়না তদন্তের জন্য যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরন করা হয়েছে। মনিরামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) শেখ মনিরুজ্জামান জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের স্বামী আরশিল কবির, শ্বশুর আজমত হোসেন, শাশুড়ি আসমা খাতুন এবং চাচি শ্বাশুড়ি শিল্পী বেগমকে থানায় আনা হয়। তবে এর মধ্যে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সন্ধ্যার পর তিনজনকে ছেড়ে দেওয়া হলেও স্বামীকে আরশিলকে থানা হাজতে রাখা হয়েছে। অপরদিকে গতকাল ময়না তদন্ত শেষে সন্ধ্যায় বরিশার মৃতদেহ তার পিতা মর্গ থেকে গ্রহন করেন। এ ব্যাপারে থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৩/সন্ধ্যা ৭:২৮

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit