বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ০১:১৯ অপরাহ্ন

মধ্য এশিয়ায় ইসলাম প্রচারে বণিকদের অবদান

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ৩০ জানুয়ারী, ২০২৩
  • ১০৩ Time View

ডেস্ক নিউজ : বিশ্বব্যাপী ইসলামের প্রচার-প্রসারে আরব বণিক ও বাণিজ্যপথগুলোর ঐতিহাসিক ভূমিকা আছে। ইসলামের প্রথম এক শতাব্দীকালের ইতিহাস বিশ্লেষণ করলে তাদের অবদান স্পষ্ট হয়ে যায়। যদিও ইসলামী খেলাফতের সীমানা বৃদ্ধিতে বিজয় অভিযানের ভূমিকাই মুখ্য ছিল, তবে জনসাধারণের মধ্যে ইসলাম, ইসলামী সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিস্তারে আরব বণিকদের অবদান অসামান্য। ইতিহাস বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় মধ্যপ্রাচ্য, মধ্য এশিয়া, উত্তর আফ্রিকা, ইরান, আফগানিস্তান ও ভারতীয় উপমহাদেশের সেসব অঞ্চলেই ইসলামের প্রসার দ্রুত হয়েছে, যার সঙ্গে প্রাক-ইসলাম যুগ থেকে আরব বণিকদের যাতায়াত ছিল। বিশেষত এশিয়ার সিল্করোডের যুক্ত ও উত্তর আফ্রিকার লোহিত সাগরের সঙ্গে যুক্ত অঞ্চল। যেমন রাই, সমরকান্দ, বুখারা, মার্ভ প্রভৃতি। উল্লিখিত অঞ্চলের বেশির ভাগ ছিল পারস্য সাম্রাজ্যের অধীন।

ইসলামের সঙ্গে বাণিজ্যের সম্পর্ক : ইসলামের আগমনভূমি মক্কার অধিবাসীরা সুপ্রাচীনকাল থেকে ব্যবসা-বাণিজ্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল। ইসলামের নবী মুহাম্মদ (সা.) নিজে যৌবনকালে ব্যবসা করেছেন এবং তার পরিবারও ছিল ব্যবসায়ী পরিবার। প্রাথমিক যুগে ইসলাম গ্রহণকারীদের বড় একটি অংশই ছিল ব্যবসায়ী। সুতরাং ইসলামের প্রচার-প্রসারের সঙ্গে মুসলিমদের বাণিজ্যিক কার্যক্রম ক্রমেই বিস্তৃত হয়েছে। খ্রিস্টীয় অষ্টম শতাব্দীর মধ্যে মুসলিমরা এশিয়া-ইউরোপকে যুক্তকারী বাণিজ্যিক পথের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করে। ইউরোপ-আফ্রিকাকে যুক্তকারী সমুদ্র পথেও তাদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রাচীন বাণিজ্যপথ সিল্ক রোডের অর্ধেকই ছিল মুসলিম শাসনাধীন অঞ্চলে। মুসলিম বণিকরা যেমন বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ত, তেমন বিপুলসংখ্যক অমুসলিম ব্যবসায়ীও মুসলিম অঞ্চলে আগমন করত। এ সময় বাণিজ্যিক আদান-প্রদানের সঙ্গে সঙ্গে ধর্মবিশ্বাস ও সংস্কৃতিরও বিনিময় হতো।

তুর্কি বংশোদ্ভূত যেসব জাতি ইসলামগ্রহণ করেছিল তাদের মধ্যে উইঘুর, হুই, কাজাখ, কিরগিজ ও তাজিকরা অন্যতম। ঐতিহাসিক কাল থেকে এসব জাতি সিল্ক রোডসংলগ্ন অঞ্চলেই বসবাস করে। এদের মধ্যে উইঘুররাই প্রথম ইসলাম গ্রহণ করে এবং তাদের বাসভূমি কাশগর চীনের একটি প্রাচীন বাণিজ্যকেন্দ্র। যার সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিল। সিল্ক রোডের সূত্র ধরে চীনের হুই সম্প্রদায়ও ইসলাম গ্রহণ করেছিল। তারা জিংজিয়াং ছাড়াও মধ্যচীনে বসবাস করে। ধারণা করা হয়, মধ্যচীনের জিয়ান শহরে প্রথম ইসলামের প্রসার ঘটে। তাজিক ও কিরগিজ সম্প্রদায়ের লোকেরা ইসলাম গ্রহণ করেছিল খ্রিস্টীয় দশম থেকে ১২ শতকের মধ্যে।

এ ছাড়া আফ্রিকার পূর্ব উপকূলের অধিবাসীদের সর্বপ্রথম ইসলামের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল আরব বণিকরা। খ্রিস্টীয় নবম শতকে যখন বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে জানজাবির দ্বীপের গুরুত্ব বৃদ্ধি পায়, তখন সোমালিয়ান নৌবণিকদের সঙ্গে আরব মুসলিমরা সেখানে যোগদান করে। আফ্রিকার পূর্ব উপকূল থেকে ভারত মহাসাগর পর্যন্ত তারা ছড়িয়ে পড়ে। লামু দ্বীপপুঞ্জের সাঙ্গা শহর মুসলিম বণিক ইসলাম প্রচারের সর্বোত্তম উদাহরণ হতে পারে। কেননা এখানেই ৮৫০ খ্রিস্টাব্দে কাঠের মসজিদ তৈরি করেন। খ্রিস্টীয় ১১ শতকের ভেতর আফ্রিকার পূর্ব উপকূলে বেশ কয়েকটি মসজিদ গড়ে উঠেছিল। একই সময়ে প্রাচীন ঘানা সাম্রাজ্যকে অতিক্রম করে মুসলিম ব্যবসায়ীরা পশ্চিম আফ্রিকায় ছড়িয়ে পড়ে।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/৩০ জানুয়ারী ২০২৩/সন্ধ্যা ৭:৫৫

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit