এম এ রহিম চৌগাছা (যশোর) : যশোরের চৌগাছায় আগাম শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক। ভালোদাম পেয়ে বেজায় খুশি। শীতকালিন আগাম সবজিতে ভরপুর মাঠ। এবার সবজির ফলনও হয়েছে বেশ। তাই নানা রকমের সবজি বাজারজাতে চাষিরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। দামও বেশি পাওয়ায় চাষিদের মুখে হাসি ফুটে উঠেছে। তারা বলছেন, বর্তমানে সবজি বেশি দামে বিক্রি করতে পারায় আর্থিকভাবে লাভবান হবেন।উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য প্রদান কারী কর্মকর্তা রাশেদুল ইসলাম জানান, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৯ শত ২৫ হেক্টর জমিতে সিম, মুলা, টমেটো, বাঁধাকপি, ফুলকপি, বেগুন, পটলসহ বিভিন্ন প্রকার শীতকালীন সবজির আগাম চাষ হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, পৌর এলাকার ইছাপুর, পাঁচনামনা, বেড়বাড়ী, বেলেমাঠ, জিয়েলগাড়ী, উপজেলার মাড়য়া, মাজালি, পেটভরা, জামিরা, পাতিবিলা, নারায়ন পুর, হাকিমপুর, জগদিশপুর, ধুলিয়ানি, মুক্তদাহসহ বিভিন্ন মাঠে আগাম শীতকালিন সবজি চাষ হয়েছে। দু চোখ যেদিকে যায় সেদিকেই সবজির ক্ষেত। ঝিঙে ফুলে ভরে গেছে মাচা, কোন কোন ক্ষেতে মাচার নিচে সারি সারি ঝুলছে লাউ, করোলা। কৃষক পরম যতেœ পরিচর্যা করছেন বাঁধাকপি, ফুলকপির ক্ষেত। সিম ক্ষেতে কাজ করছেন কৃষাণ-কৃষাণী। সবমিলিয়ে নজর যে দিকে পড়ছে সেদিকেই দেখা মিলছে নানা প্রকারের সবজি ক্ষেত। এর মধ্যে সিম মুলা, টমেটো, বাঁধাকপি, ফুলকপি, বেগুন, পটল, লাউ, করোলা উল্লেখযোগ্য।
উপজেলার পেটভরা গ্রামের সবজি চাষি হায়দার আলী বলেন, এবারের মৌসুমে আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় সব ধরণের সবজিতে বা¤পার ফলন হয়েছে। তারা বর্তমানে প্রতিদিনই সবজি বাজারজাত করছেন বাজার মূল্য বেশি থাকায় দারুণ খুশি তারা। গতবার বেশি পরিমান বৃষ্টিপাতের কারণে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিলাম। কিন্তু এবার আবহাওয়া ভালো তাই ফলনের পাশাপাশি দামও ভালো। এখন বাজার দর ভালো হওয়ায় আগাম শীতকালীন সবজি চাষে এবার লাভবান হবেন বলে আশাবাদী এ এলাকার চাষীরা। চাষি সামাউল ইসলাম জানান, তবে সুযোগ বুঝে অতি মুনাফা লোভী অসাধু ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেটের মাধ্যমেসবজির দাম কমিয়ে দেয়। তখন তারা কম দামে সবজি বিক্রি করতে বাধ্য হন। সবজি চাসীরা দাবী করেন চৌগাছায় উৎপাদিত সবজিসংরক্ষনের জন্য যদি একটি কোল্ড-স্টোরেজ থাকতো তাহলে দাম কমের সময় সবজি বিক্রি না করে সংরক্ষণ করার সুযোগ পেতাম। তখন ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট তাদের দুর্বল করতে পারতেন না। পরে বাজার বুঝে বেশি দামে বিক্রির সুযোগ পেতেন চাষিরা।
চৌগাছা বড় বাজারের সবিজ বিক্রেতা আশাদুল ইসলাম জানান, আগাম শীতকালিন সবজির ভালো দাম পাচ্ছে চাষিরা। পাইকারী হাটে প্রতি কেজি সিম ১০০ থেকে ১২০ টাকা ও ফুল কপি ১৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। এছাড়া টমেটো ৬০/৬৫ টাকা, মূলা ৫০/৬০ টাকা ও বাধা কপি ৬০/৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সমরেন বিশ্বাস বলেন, দেশের সবজির একটি বড় অংশ উৎপাদিত হয় এ এলাকায়। গ্রীষ্মকালিন, আগাম শীতকালিন ও শীতকালিন এই তিন ভাগে বারো মাস সবজির চাষ হয়ে থাকে এ অঞ্চলে। এলাকার সবজির সুনামের পাশাপাশি ব্যাপক চাহিদাও রয়েছে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন বড় বড় শহরে ।
কিউএনবি/অনিমা/১৩ অক্টোবর ২০২২,খ্রিস্টাব্দ/বিকাল ৫:৪৪