বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০২:৩৪ পূর্বাহ্ন

ঈদ ঘিরে পণ্যের বাড়তি দর

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ২৭ জুন, ২০২২
  • ১০৯ Time View

ডেস্ক নিউজ : ধর্মীয় উৎসবকে কেন্দ্র করে অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে। চক্রের সদস্যরা এবার কুরবানির ঈদ ঘিরে বাড়তি মুনাফা করতে ছক তৈরি করেছে। ইতোমধ্যে কারসাজিতে বাড়িয়েছে সব ধরনের পণ্যের দাম। এতে মাসের ব্যবধানে সব ধরনের চাল, ভোজ্যতেল, পেঁয়াজ, মসলাজাতীয় পণ্য, এমনকি মাংসসহ একাধিক পণ্য কিনতে ক্রেতার ভোগান্তি বেড়েছে। এর মধ্যে নিদারুণ কষ্টের মধ্যে আছেন নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ।

রোববার সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) বলছে- মাসের ব্যবধানে রাজধানীর খুচরা বাজারে ১৬ পণ্যের দাম বেড়েছে। এর মধ্যে প্রতি কেজি চাল খুচরা বাজারে সর্বোচ্চ ১৪.২৯ শতাংশ বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি প্রতি কেজি আটা ৭.১৪ শতাংশ, ময়দা ৩.৮৫ শতাংশ, প্রতি লিটার বোতল সয়াবিন তেল ২.৫৩ শতাংশ, প্রতি কেজি অ্যাংকর ডাল ৩.৯২ ও মসুর ডাল ৪ শতাংশ, আলু ২৭.৯১ শতাংশ, দেশি ও আমদানি করা পেঁয়াজ ১৮.৭৫ ও ২১ শতাংশ, শুকনা মরিচ ১০.৬৪ শতাংশ, হলুদ ২৭.৭৮, আদা ৮.৩৩ শতাংশ, তেজপাতা ১২.৯০ শতাংশ, দেশি মুরগি ১.৯০ শতাংশ, গুঁড়া দুধ ৬.৪৩ শতাংশ, চিনি ৩.৮০ শতাংশ ও ফার্মের ডিম ১.২৩ শতাংশ দাম বেড়েছে।

জানতে চাইলে কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান যুগান্তরকে বলেন, অন্যান্য দেশে ধর্মীয় কোনো অনুষ্ঠানে পণ্যের দাম কমানোর হিড়িক পড়ে। কিন্তু ভিন্নচিত্র আমাদের দেশে। এখানে ভোক্তাকে জিম্মি করে বাড়তি মুনাফা করতে পণ্যের দাম বাড়ানো হয়, যা একেবারেই ঠিক নয়। এছাড়া সরকার একাধিক সময় অসাধুদের চিহ্নিত করলেও তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা হয়নি। তাই বারবার অসাধুরা পণ্যের দাম বাড়িয়ে এমন পরিস্থিতি তৈরি করতে সাহস পাচ্ছে। তাছাড়া ভোজ্যতেল ও চাল নিয়ে কারসাজির সময় মন্ত্রীরা যাদের যোগসাজশের কথা বলেছেন তাদেরও শাস্তির আওতায় আনা হয়নি। তাই বাজারে ক্রেতাদের স্বস্তি ফেরাতে অসাধুদের ধরে আইনের আওতায় আনতে হবে।

রাজধানীর মালিবাগ কাঁচাবাজারের খালেক রাইস এজেন্সির মালিক ও খুচরা চাল বিক্রেতা মো. দিদার হোসেন যুগান্তরকে বলেন, বৃহস্পতিবার প্রতি কেজি মোটা চালের মধ্যে স্বর্ণা জাতের চাল বিক্রি হয়েছে ৫৩-৫৪ টাকা, যা এক মাস আগে ৪৫-৪৮ টাকা ছিল। বিআর-২৮ জাতের চাল বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ৬০ টাকা, যা আগে ৫৫-৫৬ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এছাড়া প্রতি কেজি মিনিকেট বিক্রি হয়েছে ৭০-৭২ টাকা, যা আগে ৬৮ টাকায় বিক্রি হয়েছে। নাজিরশাল প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকা, যা এক মাস আগে ৭৫ টাকা ছিল। এছাড়া পোলাওর চালের দাম বেড়েছে। মাসের ব্যবধানে ১৫ টাকা বেড়ে ১১০-১১৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তিনি জানান, এবার ঈদ ঘিরে মাসের ব্যবধানে সব ধরনের চালের দাম বেড়েছে। মিল পর্যায়ে বড় মিলারদের কারসাজিতে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

রাজধানীর খুচরা বাজারে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ অনুযায়ী প্রতি লিটার বোতল ও খোলা সয়াবিন রোববার পর্র্যন্ত ২০৫ ও ১৮৫ টাকা বিক্রির কথা থাকলেও এ দামে বিক্রি হয়নি। নির্দেশ অমান্য করে খুচরা বাজারে প্রতি লিটার বোতল সয়াবিন বিক্রি হয়েছে ২১০ টাকা, যা এক মাস আগে ২০০ টাকা ছিল। খোলা সয়াবিন তেল প্রতি লিটার বিক্রি হয়েছে ১৯০-২০০ টাকা, যা আগে ১৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। মাসের ব্যবধানে কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে প্যাকেটজাত আটা ৫৫ টাকা এবং কেজিতে দুই টাকা বেড়ে প্যাকেট ময়দা ৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে অ্যাংকর ডাল ৭০, কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে ছোট দানা মসুর ডাল ১৩৫, কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে দেশি পেঁয়াজ ৫০ এবং কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে আমদানি করা পেঁয়াজ ৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। মাসের ব্যবধানে কেজিপ্রতি ৩০ টাকা বেড়ে শুকনা মরিচ ৩০০, ৪০ টাকা বেড়ে হলুদ ২৪০, আদা কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ১৫০, তেজপাতা কেজিতে ৪০ টাকা বেড়ে ২০০, দেশি মুরগি ২০ টাকা বেড়ে ৫৫০-৫৭০ এবং চিনি কেজিতে ২-৩ টাকা বেড়ে ৮৪-৮৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

রাজধানীর কাওরান বাজারে পণ্য কিনতে আসা মো. শিমুল বলেন, এমনিতে পণ্যের দামে দিশেহারা হয়ে পড়ার মতো অবস্থা, এর মধ্যে ঈদ ঘিরে নতুন করে পণ্যের দাম বাড়ানো হয়েছে। এ যেন মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা। কিন্তু বাজারে সব ধরনের পণ্য সরবরাহ পর্যাপ্ত। দেখার যেন কেউ নেই।

জানতে চাইলে বাজার তদারকি সংস্থা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার যুগান্তরকে বলেন, ঈদ ঘিরে পণ্যের দাম সহনীয় রাখতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে বাজার তদারকি জোরদার করা হয়েছে। অনিয়ম পেলে অসাধুদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।

সূত্র :যুগান্তর

কিউএনবি/অনিমা/২৭.০৬.২০২২ খ্রিস্টাব্দ/সকাল ১০:৩৩

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

December 2025
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৬
IT & Technical Supported By:BiswaJit