শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:০৫ পূর্বাহ্ন

বন্যায় সাড়ে ৫ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ

Reporter Name
  • Update Time : শুক্রবার, ২৪ জুন, ২০২২
  • ১১৯ Time View

ডেস্ক নিউজ : করোনার কারণে ৫৭১ দিন বন্ধ ছিল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এই সময়ে লেখাপড়া হয়নি বললেই চলে। গত কয়েক মাস ধরে পুরোদমে চলছিল ক্লাস। সেটা অনুসারে স্কুলে-মাদ্রাসায় অর্ধবার্ষিক আর প্রথম সাময়িক পরীক্ষা নির্ধারিত ছিল। ঘোষণা ছিল এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা আয়োজনের। কিন্তু দেশের দুই অঞ্চলে চলমান বন্যা ফের ধাক্কা দিয়েছে শিক্ষা কার্যক্রমে। বন্যাকবলিত জেলাগুলোতে বন্ধ আছে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এ কারণে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।

আগামী এক মাসের মধ্যে এই পরীক্ষা শুরুর কোনো সম্ভাবনা নেই। আগস্টে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা নেওয়ার কথা ছিল। এটিও অক্টোবরের আগে নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, দেশের উত্তর, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের অন্তত ১৫ জেলা বন্যাকবলিত। এগুলোর সঙ্গে সর্বশেষ যুক্ত হয়েছে মধ্যাঞ্চলের আরও তিন জেলা। এগুলোর মধ্যে আবার সিলেট ও সুনামগঞ্জের প্রায় ৯০ শতাংশ এলাকা চলে গেছে পানির নিছে। বাকি জেলাগুলোর সব উপজেলা অবশ্য বন্যাকবলিত নয়।

জানা গেছে, এ কারণে সংশ্লিষ্ট জেলা ও উপজেলায় কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে। আবার কিছু প্রতিষ্ঠান আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যায় ডুবে যায়নি, এমন অনেক প্রতিষ্ঠান আবার আশ্রয় কেন্দ্র হিসাবে ব্যবহৃত হয়েছে। প্রায় ৯ দিন ধরে চলছে বন্যা। কিন্তু এ কারণে কত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত বা বন্ধ হয়ে গেছে সেই তথ্য সঠিকভাবে জানাতে পারেনি শিক্ষার সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো। তবে প্রায় সাড়ে ৫ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আবু বকর ছিদ্দীক বুধবার যুগান্তরকে জানান, বন্যায় কত প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত সেই তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরকে (মাউশি) তথ্য জানাতে বলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার মাউশির পরিচালক অধ্যাপক আমির হোসেন খানের দপ্তরে গিয়ে দেখা যায়, ক্ষতিগ্রস্ত ও বন্ধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তথ্যের জন্য তিনি নিজেই সংস্থাটির আঞ্চলিক পরিচালক ও উপপরিচালকদের ফোন দিচ্ছেন। তিনি যুগান্তরকে জানান, তাদের কাছে এখনো তথ্য আসেনি। শনিবারও দপ্তর খোলা থাকবে। ওইদিনের মধ্যে তথ্য মিলবে বলে জানান।

অন্যদিকে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের (ডিপিই) উপপরিচালক নুরুল আমিন যুগান্তরকে জানান, তাদের কাছে এ ব্যাপারে প্রাথমিক তথ্য আছে। বন্যার কারণে প্রায় ৪ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে। কিন্তু কতটি আংশিক বা পূর্ণাঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেই তথ্য পানি নেমে যাওয়া পর্যন্ত জানা সম্ভব হবে না। তবে ১৩৫১টি স্কুল আশ্রয় কেন্দ্র হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, বন্যাকবলিত জেলাগুলোর মধ্যে অন্তত ১৩৪ উপজেলার স্কুল বর্তমানে বন্ধ আছে। এই তালিকায় সর্বশেষ বৃহস্পতিবার যুক্ত হয়েছে ফেনীর ফুলগাজী আর মানিকগঞ্জের দৌলতপুর। এসব উপজেলায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিতে হয়েছে। কেননা, বাড়ি-ঘরে পানি উঠে যাওয়ায় ছাত্রছাত্রীদের কাছে লেখাপড়ার চেয়ে জীবন বাঁচানোর সংগ্রাম বড় হয়ে আবির্ভূত হয়েছে।

অন্যদিকে সরকারি সংস্থাগুলোর পূর্বাভাস অনুযায়ী, চলতি মাসের মধ্যে আক্রান্ত জেলা-উপজেলার প্রায় সব বন্যামুক্ত হতে পারে। কিন্তু পানি নেমে গেলেই লেখাপড়া শুরু করা যাবে না দুই কারণে। প্রথমত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংস্কার বা নতুন করে নির্মাণের প্রয়োজনীয় দেখা দিতে পারে। দ্বিতীয়ত, ঈদুল আজহার ছুটি শুরু হয়ে যাবে। ঈদের ছুটি ১৭ জুলাই পর্যন্ত চলবে। সেই হিসাবে বন্যাকবলিত এলাকার শিক্ষার্থীরা এক মাসের বেশি লেখাপড়া থেকে দূরে থাকছে।

এদিকে এই একই বাস্তবতায় এবারের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষাও স্থগিত করা হয়। ১৯ জুন পরীক্ষা শুরুর লক্ষ্যে সারা দেশে খাতা ও প্রশ্নপত্র পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু বন্যা তা শুরু করতে দেয়নি। আগামী ২২ আগস্ট এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরুর সূচি ছিল। এখন জুলাইয়ের চতুর্থ সপ্তাহে এসএসসি পরীক্ষা শুরু করা গেলে তা শেষ হতে এক মাস লাগবে। সে ক্ষেত্রে সেপ্টেম্বরের শেষে বা অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে চলে যাবে এইচএসসি পরীক্ষা। এ প্রসঙ্গে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক তপন কুমার সরকার বৃহস্পতিবার যুগান্তরকে বলেন, যদি এ মাসের মধ্যে বন্যার পানি নেমে যায় এবং নতুন করে কোনো বৈরি পরিস্থিতি তৈরি না হয় তাহলে ঈদের আগেই এসএসসি পরীক্ষার সময়সূচি প্রকাশ করা হবে। সে ক্ষেত্রে ঈদুল আযহার পরে পরীক্ষা নেওয়া হবে।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/২৪.০৬.২০২২ খ্রিস্টাব্দ/দুপুর ১:৩৪

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

December 2025
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৬
IT & Technical Supported By:BiswaJit