লাইফ ষ্টাইল ডেস্ক : চলছে গ্রীষ্মকাল। এই গরমের মাঝেই দেখা গেছে বর্ষার আগমনী বার্তা। শুরু হয়েছে হুটহাট বৃষ্টি। বেশ কয়েক দিন ধরে রিমঝিম পড়েছে বৃষ্টি। এর মধ্যেই জলে এসেছে কুরবানির ঈদ। ঈদ মানেই খুশির ঝলক, ঈদ মানেই আনন্দ। আর ঈদের দিনের সকালবেলার গরু-ছাগলের কুরবানি দেওয়ার আনন্দের আমেজও বেশ উপভোগ্য। পবিত্র ঈদের নামাজে আত্মনিয়োগে আর ঘরে ঘরে কুরবানির প্রস্তুতির ব্যস্ততা বেশ রোমাঞ্চকর। যেন আনন্দঘন মুহূর্ত। আবার এর মধ্যেই যদি আকাশভরে ওঠে কালো মেঘে, আর নেমে আসে ঝিরঝিরে বৃষ্টি তাহলে কুরবানির প্রস্তুতিতে ভাট পড়ে। ঈদের খুশির আনন্দ আর মনে থাকে না। বাধা হয়ে দাঁড়ায় আল্লাহর ওয়াস্তে কুরবানি দেওয়ার কাজে। তাতে অবশ্য ঠেকে থাকে না কোনো কিছুই। একটা চ্যালেঞ্জ থাকে।
এ বছর বর্ষা একটু আগেই এসেছে বলে মনে হয়। এর মধ্যে আবহাওয়া অফিসও বলছে— ঈদের দিন বৃষ্টি হতে পারে। তাহলে চলুন জেনে নিই, ঈদের দিনে বৃষ্টি হলে কুরবানির প্রস্তুতি আমরা কীভাবে নেব, তা জেনে নেওয়া যাক। প্রথমেই আমরা অস্থায়ী ছাউনি তৈরি করব। ঈদের দিন যদি বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকে, তাহলে কুরবানির জায়গা সুরক্ষিত রাখতে অস্থায়ী ছাউনি তৈরি করা ভীষণ জরুরি। ত্রিপল, পলিথিন কিংবা ক্যানভাস দিয়ে ছাউনি তৈরি করে রাখলে পশু জবাই ও কাটাকাটির কাজ বৃষ্টির হাত থেকে রক্ষা পাবে। সে জন্য ছাউনির নিচে বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা রাখতে হবে। এতে গরম কম লাগবে এবং কাজ করতেও স্বস্তি মিলবে।
এ ছাড়া কুরবানির জন্য উঁচু ও নিরাপদ স্থান প্রয়োজন হবে। বৃষ্টির দিনে নিচু জায়গায় কুরবানি দিলে পানি জমে গিয়ে রক্ত, বর্জ্য ও কাদা মিশে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ তৈরি হবে। তাই কুরবানির জন্য এমন জায়গা নির্বাচন করতে হবে, যা স্বাভাবিকের চেয়ে উঁচু এবং সহজে পানি বেরিয়ে যেতে পারে। আর সঠিক ড্রেনেজ ও পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে। বৃষ্টি হলে সবচেয়ে বড় সমস্যা দেখা দেয় নিচু জায়গায় পানি জমে থাকা। এতে কুরবানির সময় পশুর রক্ত ও বর্জ্য যদি জমা পানির সঙ্গে মিশে যায়, তাহলে চারপাশে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হবে এবং পরিবেশও মারাত্মকভাবে দূষিত হবে। তাই আগে থেকেই বাড়ির ড্রেনেজব্যবস্থা মেরামত করে নিতে হবে। যাতে সহজেই পানি নিষ্কাশন হয়।
আবার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে। বৃষ্টির দিন মানেই কাদা, পিচ্ছিল মাটি ও ভেজা পরিবেশ। আর সে জন্য কুরবানির মাংস যেন ময়লা মাটিতে না পড়ে, তাই সেদিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে। মাংস কাটার স্থান ভালোভাবে পরিষ্কার করে পলিথিন বা স্যাঁতসেঁতে নিরোধক চাদর বিছিয়ে নিতে হবে। সেই সঙ্গে পর্যাপ্ত পানি, সাবান, হ্যান্ডগ্লাভস ও জীবাণুনাশক হাতের কাছেই রাখতে হবে। যারা মাংস কাটাকাটি ও ভুঁড়ি পরিষ্কারের কাজ করবেন, তারা যেন ভেজা জামাকাপড় পরে না থাকেন এবং প্রয়োজনে রেইনকোট ব্যবহার করেন।
এ ছাড়া সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ ভাগ করে নিতে হবে। বৃষ্টির দিনে কুরবানির কাজ একা বা স্বল্পসংখ্যক লোক দিয়ে সম্পন্ন করা সহজ নয়। তাই দ্রুত সময়ে কাজ শেষ করতে আগে থেকেই একটি দল গঠন করা উচিত। যেখানে কেউ কাটাকাটির দায়িত্বে থাকবে, কেউ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার, আবার কেউ মাংস বণ্টনের দায়িত্বে থাকবে। আর মাংস সংরক্ষণের জন্য শুকনো ও নিরাপদ জায়গা নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
বৃষ্টির সময় চারপাশে পরিবেশ ভেজা থাকায় মাংস দ্রুত নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি থাকে। তাই মাংস কাটার পর যত দ্রুত সম্ভব তা সংরক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। সেই সঙ্গে মাংস বণ্টনের দিকেও বিশেষ নজর দিতে হবে। মাংস বণ্টনের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দিন বয়স্ক, প্রতিবেশী ও অসহায়-গরিবদের, যেন তারা সময়মতো তা রান্না ও সংরক্ষণ করতে পারেন।
কিউএনবি/আয়শা/০৪ জুন ২০২৫, /বিকাল ৪:২১