ডেস্ক নিউজ : গাইবান্ধা সদর উপজেলার ‘বাদিয়াখালী মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে’ ২৪ ঘণ্টা নিরবিচ্ছিন্ন সেবা নিশ্চিতসহ নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। শনিবার (১৭ আগস্ট) দুপুরে উপজেলার নুরুলগঞ্জহাটে ছাত্র ও সর্বস্তরের জনগণের ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
এ সময় কেন্দ্রটির বিভিন্ন অনিয়ম তুলে ধরে বক্তারা বলেন, বাদিয়াখালী মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে চিকিৎসকসহ ৭ জন স্টাফ থাকার কথা। কিন্তু সেখান আছে পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা, মিডওয়াইফ ও আয়া সহ মাত্র তিনজন কর্মচারী। যারা আছেন তাদের কাছে কাঙ্খিত সেবা পাচ্ছেনা জনগণ। এছাড়া বক্তারা আরও বলেন, অ্যাম্বুলেন্সের জন্য ঘর করা থাকলেও সেখানে নেই অ্যাম্বুলেন্স। মায়েদের ডেলিভারি কক্ষসহ অনেক অবকাঠামো খালি পড়ে আছে। স্থানীয় প্রভাবশালীরা কেন্দ্রটির মাঠ দখল করে সেখানে সবজি চাষ করছেন। সন্ধ্যা হলেই সেখানে মাদকসেবীদের আড্ডখানায় পরিণত হয়।
এ সময় বক্তারা জেলা-উপজেলার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অবহেলার অভিযোগ তুলে ধরে বলেন, রাষ্ট্রের কোটি টাকা অর্থ ব্যয়ে অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে। তা অযত্ন-অবহেলায় শেষ হয়ে যাচ্ছে। সেসবের ব্যবহার হচ্ছেনা, জনগণ সেবা থেকে বঞ্চিত রয়েছে। সরকারি সম্পদ মানুষ দখল করে ব্যবহার করছে। অথচ জেলা-উপজেলার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কোনো তদারকি করছেনা। কোনো দিনও পরিদর্শনে আসেনা কর্মকর্তারা। বক্তরা অবিলম্বে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রটি সংস্কার, অনুমোদিত জনবল নিয়োগ করাসহ ২৪ ঘণ্টা নিরবিচ্ছন্ন সেবা নিশ্চিতের দাবি জানান।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, কাজী আব্দুল খালেক, দিদারুল ইসলাম মামুন ও মোহাম্মদ মাহিম সহ অন্যরা। মানববন্ধন শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল নুরুলগঞ্জহাট থেকে বের হয়ে ‘মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে’ গিয়ে শেষ হয়। এদিকে, গত ৮ আগস্ট গাইবান্ধা পরিবার পরিকল্পনা অফিসের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক প্রসেনজিৎ প্রণয় মিশ্রের বিরুদ্ধে দায়িত্ব পালনে অনিহা, কর্মচারীদের সামান্যতেই কৈফিয়ত তলব করে হয়রানি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেন জেলার ভুক্তভোগী কর্মকর্তা- কর্মচারীরা।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, উপপরিচালক প্রসেনজিৎ অফিস কিংবা মাঠ কার্যালয় পরিদর্শন না করে এবং ছুটি ছাড়াই প্রত্যেক সপ্তাহে মোবাইলে পরিবার পরিকল্পনা ট্রেনিং সেন্টারের সাথে কথা বলে বগুড়া, শেরপুর ও মিঠাপুকুর নিপোর্টে প্রশিক্ষক হিসেবে যান। তিনি নিজে ছুটি না নিয়েও নিয়মিত ছুটি কাটান। অথচ কোন কর্মচারী তার পারিবারিক অসুবিধার কারণে নৈমিত্তিক ছুটি/অর্জিত ছুটি চাইলে কিংবা ছুটির ব্যাপারে কথা বলতে গেলে বকা-বকি, গালি গালাচ করেন।
এছাড়াও ‘গাইবান্ধা মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রটি’ দীর্ঘদিন ধরে রংপুর বিভাগের আট জেলার প্রথম সারির দিকে অবস্থান করছিল। কেন্দ্রটি ইতিপূর্বে পরপর বারো বার দেশের শ্রেষ্ঠ কেন্দ্রের পুরষ্কার পেয়েছে। কিন্তু বর্তমানে (এই উপপরিচালক আসার পর) কেন্দ্রটির অগ্রগতির প্রতিবেদন দিন দিন নিম্নমুখী হয়েই চলেছে বলেও অভিযোগে তুলে ধরা হয়।
কিউএনবি/আয়শা/১৭ অগাস্ট ২০২৪,/সন্ধ্যা ৬:০০