ডেস্ক নিউজ : আসন্ন কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে সারা দেশের মতো টাঙ্গাইলের খামারিরাও ব্যস্ত হয়ে পড়েছে শেষ মুহূর্তের পরিচর্যায়। জেলার ১২টি উপজেলায় খামারের কর্মচারী-মালিকরা ব্যস্ত সময় পার করছে প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজাকরণ প্রক্রিয়ায়। এবার জেলায় কোরবানির পশুর চাহিদার থেকে অনেক বেশি পশু প্রস্তত করা হয়েছে। জেলার চাহিদা মিটিয়েও খামারিরা বাড়তি পশু জেলার বাইরে বিক্রি করবে।
টাঙ্গাইল জেলা প্রাণী সম্পদ দপ্তর সূত্রে জানা যায়, টাঙ্গাইল জেলার ১২টি উপজেলাসহ বিভিন্ন জায়গায় ২৫ হাজার ৮৯২টি ছোট বড় খামার রয়েছে। যেখানে প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজাকরণ করা হচ্ছে। ইতি মধ্যে জেলায় আগামী কোরবানীর ঈদ উপলক্ষে কোরবানী যোগ্য ২ লাখ ৪ হাজার ৪০৬টি পশু প্রস্তত করা হয়েছে। এবার জেলায় কোরবানীর পশুর চাহিদা রয়েছে ১ লাখ ৮৫ হাজার। কোরবানীর ঈদের পশুর চাহিদা মিটিয়েও খামারীরা জেলার বাইরে বিক্রি করবে। এছাড়া জেলায় কোরবানীর পশু বিক্রির জন্য ৬০টি হাট বসবে।
৬০টি হাটে টাঙ্গাইল জেলা পশু সম্পদ দপ্তর থেকে ৪৬টি ভেটেনারী মেডিকেল টিম কাজ করবে। কোন হাটে কোরবানীর পশু অসুস্থ্য বা স্বাস্থ্য পরীক্ষাসহ বিভিন্ন প্রচার সেবা দেয়া হবে। যদি কোন পশু ট্রাকে উঠা নামা করতে রাস্তায় অসুস্থ্য হয়ে পড়ে সেখানেও ভেটেনারী মেডিকেল টিম পৌছে যাবে। প্রতিটা হাটে জেলা পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। যাতে করে পশুর মালিকরা পশু বিক্রি করে নিরাপদভাবে তাদের বিক্রিয়কৃত টাকা নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারে।
সকল খামারগুলোতেই প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে কোনো প্রকার ক্ষতিকারক ওষুধ ছাড়াই গরু মোটাতাজা করা হয়ে থাকে। অল্প সময়ে গরু মোটাতাজা করতে যেন কোনো খামারি গরুকে বিভিন্ন প্রকার নিষিদ্ধ ওষুধ যেমন- হরমোন, ডেক্সামিথাজল, ডেকাসন, স্টোরেয়েড ইত্যাদি না খাওয়ায় তার জন্য আমরা সর্বদাই সচেষ্ট থাকি। টাঙ্গাইল সদর উপজেলার ব্রাদার্স ফার্মের রাসেল রানা জানান, তিনি শখ করেই ব্রাদার্স ফার্ম গড়ে তুলেন। ফার্ম আস্তে আস্তে বড় হওয়ায় এখন তিনি বানিজ্যিকভাবেই পশু পালন শুরু করেছেন। এ বছর কোরবানীর ঈদে বিক্রির জন্য ৪৫টি গরু প্রস্তুত করেছেন।
দেশীয় জাতের এই গরু গুলোর খাবারের খাদ্য তালিকায় রয়েছে খৈল, ভুষি, খড়, সবুজ ঘাস, ভুট্টা গাছের সাইলেন্সার, ছোলা ও ঝাউয়ের মতো প্রাকৃতিক খাবার। প্রাকৃতিক উপায়ে সম্পূর্ণ ষ্টেরয়েড ও ইনজেকশনমুক্ত বিষুদ্ধ গো-খাদ্যের মাধ্যমে বড় করে কোরবানির জন্য বিক্রয় করছেন বলে জানিয়েছেন ফার্ম কর্তপক্ষ। প্রাকৃতিকভাবে গরু বড় করে আমরা বিক্রি করে আসছি। আলহেরা এগ্রোফার্মের মাওলানা মো. শহিদুল ইসলাম জানান, আলহেরা এগ্রো ফার্মটি সৈয়দ নাজমুল হাসান প্রতিষ্ঠা করেন। এ ফার্মটি জামিয়া আল হেরা মাদ্রাসার নামে ওয়াক্ফ করে দেয়া। এ ফার্ম থেকে তাদের চাহিদা মিটিয়েও অতিরিক্ত গরুগুলো বিক্রি করে দেয়া হয়।
খামারি শাহরিয়ার ও ওমর ফারুক জানান, তারা প্রতি এবার কোরবানী ঈদকে সামনে রেখে প্রাকৃতিক উপায়ে খাবার খাওয়ে গরু মোটাতাজা করণ করা হচ্ছে। দেশীয় গরুর চাহিদা বেশি থাকায় তারা দেশীয় পদ্ধতিতেই দেশিয় গরু বিক্রি করে থাকেন। টাঙ্গাইল জেলা প্রাণি সম্পদ অফিসার ডা. মো. মাহবুবুল ইসলাম জানান, এবার জেলার চাহিদা মিটিয়ে কোরবানির পশু বাড়তি থাকবে। কোরবানির জন্য প্রস্ততকৃত সকল খামারিদের খামারে জেলা প্রাণী সম্পদ দপ্তর সকল প্রকার সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে।
কিউএনবি/আয়শা/২২ মে ২০২৪,/সন্ধ্যা ৬:৫১