শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫, ০২:৩৮ পূর্বাহ্ন

অসুস্থ মুক্তিযোদ্ধা সিরাজের মানবেতর জীবন যাজন

খোরশেদ আলম বাবুল শরীয়তপুর প্রতিনিধি ।
  • Update Time : মঙ্গলবার, ১১ অক্টোবর, ২০২২
  • ১৪০ Time View

খোরশেদ আলম বাবুল শরীয়তপুর প্রতিনিধি : ভারতের আগরতলা অম্পি নগরে প্রশিক্ষণ শেষে দেশে ফিরে ৮ নম্বর সেক্টরে মুক্তিযুদ্ধ করেন মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল হক মুন্সী (৭০)। দেশ স্বাধীন করে শরীয়তপুর জেলা সদরের খেলসী বিলাস খান গ্রামে ফিরেছেন ১৯৭২ সালের প্রথম দিকে। এই স্বক্রিয় মুক্তিযোদ্ধা আজ নানান জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে শয্যাশায়ি। সঠিক চিকিৎসার অভাবে অন্তিম শয্যায় প্রহর গুনছেন তিনি। শেষ জীবনে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় ও সরকারের কাছ থেকে সঠিক চিকিৎসা পেতে আবেদন জানিয়েছেন তিনি।

শরীয়তপুর পৌরসভার খেলসী বিলাস খান গ্রামের মৃত হেলাল উদ্দিন মুন্সীর ছেলে সিরাজুল হক মুন্সী। সে ১৯৭১ সালে পালং তুলাসার গুরুদাস উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র ছিলেন। হানাদার বাহিনীর হাত থেকে দেশ ও জাতিকে রক্ষার জন্য মুক্তিযুদ্ধে যাওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিলেন তিনি। দেশ ছেড়ে ভারতে গিয়ে আগরতলা অম্পি নগর ক্যাম্পে মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ নিয়ে ৮ নম্বর সেক্টর কুমিল্লা অঞ্চলে যুদ্ধ করেন। দেশ স্বাধীন করে বীরের ন্যায় গ্রামে ফিরেছেন। তিনি পারুল বেগমকে বিয়ে করে দাম্পত্য জীবন শুরু করেন। দীর্ঘ দাম্পত্য জীবনে এই দম্পত্তি নিঃসন্তান ছিলেন।

পরে ঝুমুর নামে একটি কন্যা সন্তান দত্তক নিয়ে লালন পালন করেন। ঝুমুর বর্তমানে একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। এদিকে মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল হক মুন্সী ২ কবছর যাবৎ ফুসফুস, কিডনি, শ্বাসকষ্ট ও ডায়াবেটিক সহ নানান রোগাক্রান্ত। ব্যক্তিগত উদ্যোগে চিকিৎসা করে অর্থ ও জমিজমা খুয়িয়ে আজ সর্বশান্ত। শেষ বেলায় মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় ও সরকারী সহায়তায় চিকিৎসার আবেদন জানিয়েছেন এই মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল হক মুন্সী জানায়, প্রতিদিন তাকে অক্সিজেন নিতে হয়। ঔষধও নিতে হয় কয়েক প্রকারের। মাসে কমপক্ষে তিন বার ডাক্তারের কাছে যেতে হয়। কেউ কোলে তুলে ঘর থেকে ভ্যানে ওঠায় আবার ভ্যান থেকে কোলে তুলে হাসপাতালে নামায়। তিনি অন্যের সহায়তা ছাড়া বিছানার বাহিরেও যেতে পারেন না।

দুই বছরে প্রায় ডজন খানেক ডাক্তারের কাছ থেকে চিকিৎসা গ্রহণ করেছেন। তেমন কোন আরোগ্য পায়নি তিনি। বর্তমানে তার শারীরিক অবস্থা খুবই সংকটাপন্ন। ইতোমধ্যে তিনি জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে আবেদন করে সরকারী চিকিৎসা সহায়তা চেয়েছিলেন। সেখান থেকে কোন সাড়া মিলেনি। জেলার প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুস সাত্তার খান তাকে একবার আর্থিক সহায়তা দিয়েছিলেন। এখন প্রতিবেশী আত্মীয়-স্বজনদের সহায়তায় তার চিকিৎসা ও সংসার চলছে। শরীয়তপুর সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুল আজিজ সিকদার বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে তাকে আর্থিক অনুদান দেওয়া হয়েছে। সরকারি হাসপাতালে ভর্তি থাকলে ফ্রি চিকিৎসা ও ঔষধের ব্যবস্থা আছে। আলাদা ভাবে কোন সুযোগ নাই।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/১১ অক্টোবর ২০২২,খ্রিস্টাব্দ/সন্ধ্যা ৭:১৮

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

June 2025
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit