রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ১২:২৪ অপরাহ্ন

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক কৌশলগত অংশীদারিত্বের ঊর্ধ্বে : প্রধানমন্ত্রী

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২
  • ১০২ Time View

ডেস্কনিউজঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যেকার সম্পর্ক কৌশলগত অংশীদারিত্বের ঊর্ধ্বে এবং গত এক দশকে তা আরো জোরদার হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘গত ৫০ বছরে একটি শক্তিশালী অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার পর, উভয় দেশই ক্রমবর্ধমান বিস্তৃত সেক্টরাল সহযোগিতায় কাজ করছে।’

প্রধানমন্ত্রী নয়া দিল্লিতে তার অবস্থানকালীন হোটেলের বলরুমে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বা গুরুতর আহত ভারতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীর সৈনিক বা কর্মকর্তাদের সরাসরি বংশধরদের ‘মুজিব বৃত্তি’ প্রদান অনুষ্ঠানে ভাষণে একথা বলেন।

সামুদ্রিক ও স্থল সীমানা নির্ধারণের দীর্ঘস্থায়ী সমস্যার সমাধান সেই প্রভাবের সাক্ষ্য বহন করে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সম্পর্কটি বিশ্বব্যাপী ‘প্রতিবেশী কূটনীতির জন্য রোল মডেল’ হিসেবে পরিচিত।’

তিনি বলেন, ২০০টি মুজিব স্কলারশিপ, দশম শ্রেণীতে ১০০টি এবং দ্বাদশ শ্রেনীর স্তরে ১০০টি, যুদ্ধের ভারতীয় প্রবীণ সৈনিকদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে তাদের বংশধরদের জন্য আমাদের এই শুভেচ্ছা উপহার, যারা আমাদের জন্য ১৯৭১ সালে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছিলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা ভারতীয় ভাইদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই যারা আমাদের মুক্তিযুদ্ধে তাদের অমূল্য জীবন উৎসর্গ করেছেন এবং রক্ত দিয়েছেন। যারা তাদের জীবন উৎসর্গ করেছেন তাদের স্মরণ করা আমাদের জন্য সর্বদা গর্বের বিষয়। আপনাদের আমার অভিবাদন, হে সাহসী হৃদয়, আমাদের বীরদের!’

শেখ হাসিনা বলেন, যেহেতু আমরা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে আমাদের মহান পূর্বপুরুষদের উত্তরাধিকারকে এগিয়ে নিয়ে যেতে আগ্রহী, তাই তরুণ প্রজন্মকে সেই ঐতিহাসিক অতীতের সাথে পুনরায় সংযুক্ত করার জন্য আমাদের এই বিনীত প্রচেষ্টা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা বিশ্বাস করেন যে বৃত্তিপ্রাপ্তরা তাদের পূর্বপুরুষদের বীরত্বের স্মৃতি পুনরায় ঘুরে দেখার, বর্তমান পরিস্থিতির সাথে সম্পর্কিত এবং দুই দেশের মধ্যে সেতুবন্ধন চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ পাবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ভারত বন্ধুত্বের পথ অতিক্রম করছে এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও সুবর্ণজয়ন্তীর ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের কথা স্মরণ করে ২০২১ আমাদের সম্পর্কের একটি যুগান্তকারী বছর ছিল। বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং আমাদের কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০তম বার্ষিকী।

প্রধানমন্ত্রী কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করেন যে ভারতের রাষ্ট্রপতি ২০২১ সালের ডিসেম্বরে ঢাকায় আমাদের বিজয়ের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপনে যোগ দিয়েছিলেন।

এসব উপলক্ষ উদযাপনে বেশ কিছু যৌথ কর্মসূচির আয়োজন করা হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, যার মধ্যে রয়েছে বঙ্গবন্ধু ও মহাত্মা গান্ধী এবং বাংলাদেশ-ভারত বন্ধুত্বের স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশ, বঙ্গবন্ধু-বাপু ডিজিটাল প্রদর্শনী প্রভৃতি। তাছাড়া ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে বাংলাদেশ কন্টিনজেন্টের অংশগ্রহণ ছিল লক্ষণীয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনী নিয়ে যৌথ প্রযোজনার নির্মানাধীন কায়োপিক ‘মুজিব: দ্য মেকিং অব দ্য নেশন’-এর কাজ চলছে এবং শিগগিরই মুক্তি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ ও ভারত যৌথভাবে ৬ ডিসেম্বরকে ‘মৈত্রী দিবস’ হিসেবে উদযাপন করছে, যে দিনটি একটি ঐতিহাসিক দিন যখন ভারত ১৯৭১ সালে বাংলাদেশকে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়, তিনি উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, ‘এই যৌথ উদযাপনের মাধ্যমে, বাংলাদেশ ও ভারত বিশ্বের অন্যান্য দেশের কাছে পারস্পরিক আস্থা ও সম্মানের ভিত্তিতে গড়ে ওঠা ভালো প্রতিবেশীকে তুলে ধরেছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালে আমাদের মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখা আমাদের বিদেশী বন্ধুদের সম্মান জানাতে বাংলাদেশ সরকার একটি কর্মসূচি শুরু করেছে।

“আমরা সৌভাগ্যবান যে ২০১১ সালে প্রথম সম্মাননা প্রদানের অনুষ্ঠান করতে পেরেছিলাম যখন বিদেশী বন্ধুদের সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার ‘বাংলাদেশ ফ্রিডম অ্যাওয়ার্ড’ ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীকে দেয়া হয়েছিল। পরবর্তীকালে ভারতের আরেক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শ্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী এবং সাবেক রাষ্ট্রপতি শ্রী প্রণব মুখার্জীসহ ভারতীয় নেতাদের আরও পুরষ্কার প্রদান করা হয়েছিল,” বলেন তিনি।

যুদ্ধের নায়ক এবং ভারতের নাগরিক সমাজের সদস্যদেরও পর্যায়ক্রমে সম্মানিত করা হয়েছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, মোট ৩৪০ জন বিদেশী নাগরিক এবং সংস্থাকে সম্মানিত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ২২৬ জনই ভারতের।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০১৭ সালের এপ্রিলে আমি নয়া দিল্লীতে মোদিজির উপস্থিতিতে বীর যোদ্ধাদের বংশধর ও পরিবারের নিকটাত্মীয় সদস্যদের পুরস্কার প্রদানের জন্য সম্মান পেয়েছি।’

প্রধানমন্ত্রী আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের ভারতে তাদের চিকিৎসার জন্য সহায়তা প্রদানের পাশাপাশি তাদের পরিবারের সদস্যদের বৃত্তি প্রদানের জন্য ভারত সরকারের সদয় পদক্ষেপের প্রশংসা করেন।

তিনি বলেন, ‘এটি অবশ্যই বাংলাদেশের যুদ্ধবীরদের জন্য তাদের অব্যাহত সমর্থন এবং সদিচ্ছা প্রদর্শন করে যারা একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের জন্য লড়াই করেছিলেন।’

সূত্র : বাসস

কিউএনবি/বিপুল/০৭.০৯.২০২২/ সন্ধ্যা ৭.৪৫

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit