ডেস্ক নিউজ : চারদিকে থৈ-থৈ যমুনা নদীর পানি। নৌকা ছাড়া পায়ে হেঁটে কোথাও যাওয়ার জো নেই। বয়সের ভারে সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারেন না ৮৫ বছর বয়সি জয়গন বেগম। পরিবারের লোকজনদের মাধ্যমে উঠবস করতে হয় তার। বসত-বাড়িতে বন্যার পানি প্রবেশ করায় উঁচু স্থানে আশ্রয় নেওয়ার জন্য দৌড়ঝাপ বানভাসিদের। এদিকে সকালে একটা রুটি খেয়ে থাকলেও দুপুর পর্যন্ত পেটে ভাত জোটেনি তার। যমুনার কালো থাবায় নিঃস্ব ও অভাব-অনটনে চরম অসহায়ত্বে পেটে পাথর বেঁধেই খোলা আকাশের নিচে শুয়ে আছেন। ৮৫ বছর বয়সেও মেলেনি বয়স্ক ভাতা বা সরকারিভাবে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর।
টাঙ্গাইলের ভূঞাপর উপজেলা যমুনা চরাঞ্চলের কোনাবাড়ীর গ্রামের মৃত হাছেন আলী স্ত্রী জয়গন বেগম কষ্টের কথা এভাবেই জানান। বানভাসিদের সংবাদ সংগ্রহে গেলে এমন চিত্র দেখা যায়। জয়গন বেগমের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, কোনাবাড়ী চরাঞ্চলে বন্যার পানি তার বাড়িতে প্রবেশ করেছে। তার সন্তানরা ঘরসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র সরানোর কাজে ব্যস্ত। কিন্তু জয়গন বৃদ্ধা হওয়ায় তিনি ঠিকমতো হাঁটাচলা করতে পারেন না। তাই তিনি চৌকির উপরে অসহায়ের মতো শুয়ে আছেন। আর কপালে নানা দুশ্চিন্তায় ভাজ পড়েছে। ঠিকমতো কথাও বলতে না পারায় নীরবে চোখের পানি ফেলছেন।
স্থানীয় জোয়াদ্দার হোসেন জোয়াদ জানান, জয়গনের এক ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে। তার স্বামী প্রায় ২৬ বছর আগে মারা যায়। ছেলেই তাকে দেখাশুনা করে আসছে। শেষ বয়সে এসেও তিনি এখন পর্যন্ত বয়স্ক ভাতাসহ কোনো ধরণের সহায়তা পাননি। শুধু তাই নয়, তার নিজস্ব বসতবাড়ি নেই। স্থানীয় মেম্বার ও ইউপি চেয়ারম্যানের থেকেও পাননি কোনো ধরণের সাহায্য-সহযোগিতা। এ বিষয়ে উপজেলার গোবিন্দাসী ইউপি চেয়ারম্যান দুলাল হোসেন চকদার জানান, বৃদ্ধ বয়সেও তিনি কেন বয়স্ক বা বিধবা ভাতা পাননি সেটা মেম্বারদের থেকে জেনে দ্রুত বয়স্ক ভাতা কার্ডের ব্যবস্থা করা হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা শহিদুজ্জামান মাহমুদ বলেন, বয়স্ক ভাতার বিষটি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা তালিকা করে। তবে বৃদ্ধাটির বিষয়ে আপনাদের মাধ্যমে জানতে পারলাম। আমাকে তার তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
কিউএনবি/আয়শা/২৩.০৬.২০২২ খ্রিস্টাব্দ/বিকাল ৪:৪০