ডেস্ক নিউজ : টানা বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে মৌলভীবাজারের নদী ও হাওড়ের পানি হু হু করে বেড়েই চলেছে। প্লাবিত হচ্ছে জেলার নিম্নাঞ্চল। জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে পৌর শহর গুলোতে। জেলার প্রধান মনু, কুশিয়ারা ও ধলাই নদীর অতি ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধে মেরামতের জন্য কার্যকরী কোনো উদ্যোগ নেয়নি পানি উন্নয়ন বোর্ড। পানি উন্নয়ন বোর্ডের এমন উদাসিনতায় আশংকায় রয়েছেন মানুষ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চলতি বর্ষা মৌসুমে বন্যার হাত থেকে রক্ষার জন্য জরুরি প্যাকেজে জেলার প্রধান খরস্রোতা মনু নদীর ৪টি স্থানে কাজ শুরু হলেও স্থান পায়নি জেলার রাজনগর উপজেলার কোনাগাঁও, আদনাবাজ, কামারচাক বাজার সংলগ্ন ভুলানগর, খাসপ্রেমনগর ও চাটিমেলাঘর ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলো।
সরেজমিনে রাজনগর উপজেলার কোনাগাঁও এলাকায় দেখা যায়, মনু নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধের গত বছরের জরুরি কাজের আওতাধীন স্থানটি ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। বাঁধ ভেঙে নদীর সঙ্গে বিলিন হয়ে আর মাত্র আড়াই ফুটের মতো প্রস্থ রয়েছে। পানি বৃদ্ধি পেলে যেকোনো সময় ওই অংশ ভেঙে নদীতে বিলিন হয়ে যাওয়ার আশংকা রয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, জেলার প্রধান তিনটি নদীতেই ক্রমান্বয়ে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। হাওড়ের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। এদিকে অতি বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে তলিয়ে গেছে মৌলভীবাজার-বড়লেখা আঞ্চলিক মহাসড়কের কিছু অংশ। বিশেষ করে হাকালুকি ও কাউয়াদীঘি হাওড়ের নিম্নাঞ্চলের গ্রাম।
রাজনগর উপজেলার কোনাগাঁও গ্রামের আরিফ মিয়া, হৃদয় মিয়া ও জসিম মিয়াসহ অনেকেই বলেন, আমরা খুব ঝুঁকির মধ্যে রয়েছি। পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের এলাকায় মনু নদীতে ভাঙন দেখা দিচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজনকে ওই ঝুঁকিপূর্ণ স্থানের কথা বললেও তারা গুরুত্বই দেননি। নদীতে পানি আরও বাড়লে যেকোনো সময় ঝুঁকিপূর্ণ স্থান ভেঙে যেতে পারে।
আদনাবাজ এলাকার গিয়াস মিয়াসহ অনেকেই বলেন, শনিবার আমাদের এলাকায় একটি স্থান ভেঙে কিছু জায়গা নদীর সঙ্গে বিলিন হয়ে গেছে। আমরা এলাকাবাসী খুব আতঙ্কের মধ্যে সময় পার করছি। কর্তৃপক্ষ সময়মতো ভাঙনকৃত জায়গা মেরামত না করার কারণে এসব সমস্যা দেখা দিচ্ছে।
কোনাগাঁও এলাকার সাবেক মেম্বার এনামুল হোসেন চৌধুরী বলেন, এলাকায় কয়েকটি স্থান ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। কর্তৃপক্ষ যদি দ্রুত মেরামত না করেন তাহলে ওই সব স্থান দিয়ে ভাঙন দেখা দিতে পারে এবং ২০১৮ সালের মতো বন্যা হতে পারে।
মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আক্তারুজ্জামান বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে কাজ চলমান আছে। অতি ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধের বিষয়ে জানতে চাইলে এড়িয়ে যান।
তিনি বলেন, সব মিলিয়ে মৌলভীবাজারের বন্যার পরিস্থিতি অনেকটা অবনতির দিকে।
জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান বলেন, বড়লেখা, জুড়ী ও কুলাউড়ায় পানি অনেকটা বাড়ছে। জেলার প্রতিটি ইউনিয়নে আমাদের আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
কিউএনবি/অনিমা/১৮.০৬.২০২২ খ্রিস্টাব্দ/রাত ১০:১৯