বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:৩৫ অপরাহ্ন

কিডনিতে পাথরের কারণ ও প্রতিকার

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ১৩ জুন, ২০২২
  • ১৩৭ Time View

স্বাস্থ্য ডেস্ক : মানবদেহের উপাদান ও খনিজ দিয়ে আমাদের শরীরের কয়েকটি অঙ্গে পাথর তৈরি হতে পারে। যেমন: পিত্তথলি, কিডনি, অগ্ন্যাশয়ে। কিডনি ও মূত্রথলির পাথর আমাদের দেশে প্রায়ই দেখা যায়।

আমাদের শরীরের গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ হল কিডনি। শরীরের রক্ত পরিশোধনেরও অঙ্গ কিডনি। শরীরে জমে থাকা অনেক রকম বর্জ্যও পরিশোধিত হয় কিডনির মাধ্যমে।

তবে কিডনির নানা সমস্যার মধ্যে সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে কিডনিতে পাথর হওয়া। আমাদের দেশে কিডনির সমস্যায় আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা কিন্তু কম নয়। সংখ্যাটা দিন দিন বেড়েই চলছে। কিডনির সমস্যাগুলির মধ্যে অন্যতম হল স্টোন বা পাথর হওয়ার সমস্যা।

কিডনির পাথর অনেক রকমের হয়ে থাকে। যেমন-
– কিডনির সব পাথরই কিন্তু এক রকম না। রাসায়নিক বিশ্লেষণ করে কয়েক ধরনের পাথর পাওয়া যায়।
– ক্যালসিয়াম অক্সালেট: সবচেয়ে বেশি, প্রায় ৬০-৮০ শতাংশ ক্ষেত্রে পাওয়া যায়। এক্স-রে করলে ধরা পড়ে।
– মিক্সড: ক্যালসিয়াম অক্সালেট ও ফসফেটের মিশ্রণ।
– ট্রিপল ফসফেট (অ্যামোনিয়াম-ম্যাগনেশিয়াম-ক্যালসিয়াম ফসফেট): সংক্রমণ হলে সাধারণত এ–জাতীয় পাথর হয় ক্ষারীয় (অ্যালকালাইন) প্রস্রাবে।
– ইউরিক অ্যাসিড স্টোন: সাধারণত এক্স-রেতে দেখা যায় না। গাউট বা বাতজনিত রোগীদের এই পাথর থাকতে পারে।
অনেক আগে থেকেই কিডনিতে পাথর তৈরির কারণ জানার জন্য অনেক গবেষণা হয়েছে, এখন চলছে এবং আগামীতেও চলবে। 

চলুন দখে নেওয়া যাক সাম্প্রতিক ধারণা গুলো-
– প্রস্রাবে দ্রব অত্যধিক ঘন হলে পাথরের কণা বা ক্রিস্টাল তৈরি হয়। এ অবস্থা সৃষ্টি হয় যদি শরীর থেকে প্রতিনিয়ত পানি কমে যায় (ডিহাইড্রেশন)। পাথর তৈরির প্রধান কারণ ডিহাইড্রেশন।
– যারা গরম আবহাওয়ায় কাজ করেন এবং পর্যাপ্ত পানি পান করেন না, তাঁদের শরীরে পানির পরিমাণ কমে পাথর তৈরির আশঙ্কা বেশি। তাই মরুভূমিতে, মধ্যপ্রাচ্যের গরম দেশগুলোতে এমনকি আমাদের এই উপমহাদেশের কিছু কিছু স্থানে প্রচুর কিডনি পাথরের রোগী পাওয়া যায়।
– এ ছাড়া প্রস্রাবে বারবার সংক্রমণ থেকেও পাথর হতে পারে। শরীরের কিছু খনিজ উপাদান, যেগুলো পাথর তৈরিতে বাধা দেয় (ইউরিনারি স্টোন ইনহিবিটরস) সেগুলো প্রস্রাবে কমে গেলেও কিডনিতে পাথর হওয়ার আশঙ্কা থাকে। যেমন: প্রস্রাবে সাইট্রেট, ম্যাগনেশিয়াম, জিংকের পরিমাণ কমে গেলে।

শরীরে এমন কিছু উপাদান আছে, যেগুলোর পরিমাণ প্রস্রাবে বেড়ে গেলে কিডনিতে পাথর তৈরি হতে পারে। যেমন: প্রস্রাবে ক্যালসিয়াম ও ইউরিক অ্যাসিড বেশি পরিমাণে নির্গত হওয়া। 

যেকোনো কারণে মূত্রপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হলে এবং মূত্রতন্ত্রে জন্মগত কোনো সমস্যা থাকলেও পাথর তৈরির আশঙ্কা থাকে। 

বিভিন্ন মেটাবলিক কারণ, যেমন: প্যারাথাইরয়েড গ্রন্থির অত্যধিক কার্যকারিতা বা টিউমার রক্তে ও প্রস্রাবে ক্যালসিয়াম বাড়িয়ে দিয়ে থাকে। আর এ ক্ষেত্রে দুই দিকের কিডনিতেই অনেক পাথর তৈরি হয়। শিশুদের জন্মগত মেটাবলিক কারণ, যেমন—সিসটিনিউরিয়া এবং জ্যানথিনিউরিয়া কিডনি পাথরের কারণ। পাথর সাধারণত কিডনিতে তৈরি হয়ে প্রস্রাবের নালি এবং মূত্রথলিতে নেমে আসে।

চলুন দেখে নেওয়া যাক কিডনিতে পাথর হওয়ার কিছু উপসর্গ-
– রক্তবর্ণের প্রসাব।
– বমি বমি ভাব। অনেক সময় বমিও হতে পারে।
– কোমরের পিছন দিকে ব্যথা হওয়া। এই ব্যথা তীব্র তবে সাধারণত খুব বেশি ক্ষণ স্থায়ী হয় না। ব্যথা কিডনির অবস্থান থেকে তলপেটেও ছড়িয়ে পড়তে পারে।

চলুন দেখে নেওয়া যাক কিডনিতে পাথর হলে চিকিত্‍সা-
কিডনির অবস্থানে ব্যথা এবং রক্তবর্ণের প্রসাব হলে চিকিৎসকরা সাধারণত দুইটি সম্ভাবনার কথা চিন্তা করেন। একটি হল কিডনির ইনফেকশন, অন্যটি কিডনিতে পাথর। তাই কিডনির এক্সরে, আলট্রাসনোগ্রাম এবং প্রসাবের নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরই উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়। কখনও পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি আর যথাযথ ওষুধ খেলেই এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে অস্ত্রপচারই একমাত্র উপায়।

কিউএনবি/অনিমা/১৩.০৬.২০২২/ রাত ১১.৫১

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit