শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ১১:৩৮ অপরাহ্ন

উম্মতকে নিয়ে মহানবী (সা.)-এর আশঙ্কা

Reporter Name
  • Update Time : শুক্রবার, ১৩ মে, ২০২২
  • ১২৫ Time View

ডেস্ক নিউজ : আমাদের প্রিয় নবী (সা.) তিনি ছিলেন দয়ার নবী। বিশ্ববাসীর জন্য রহমতস্বরূপ। উম্মতের জন্য কোনটা কল্যাণকর আর কোনটা অকল্যাণকর—এ নিয়ে আমাদের বারবার সতর্ক করেছেন। নিজের উম্মতকে নিয়ে যেসব ব্যাপারে আশঙ্কা করেছেন, সেসব বিষয়ে আগে থেকেই আমাদের সাবধান করে গেছেন। মানুষের কিছু চরিত্র আর অভ্যাসের ব্যাপারে তিনি আশঙ্কা করেছেন, তাই তিনি এগুলো স্পষ্টভাবে বলে গেছেন। এ ছাড়া কিছু মন্দ লোকের ব্যাপারে তিনি আমাদের সতর্ক করে গেছেন, তাই সেসব মানুষের নাম-বৈশিষ্ট্য উম্মতের সামনে স্পষ্ট করেছেন, যেন এসব থেকে উম্মত বেঁচে থাকতে পারে। নিম্নে সেগুলো নিয়ে আলোচনা করা হলো—

দুনিয়ার মোহ

দুনিয়ার প্রতি অতিরিক্ত ভালোবাসা এই উম্মতকে গোমরাহ করে দেবে। এ ব্যাপারে তিনি আমাদের সতর্ক করেছেন। রাসুল (সা.) বলেছেন, আল্লাহর কসম! আমি তোমাদের নিয়ে দারিদ্র্যের ভয় করি না। কিন্তু এ আশঙ্কা করি যে তোমাদের ওপর দুনিয়া এমন প্রসারিত হয়ে পড়বে, যেমন তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর প্রসারিত হয়েছিল। আর তোমরাও দুনিয়ার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়বে, যেমন তারা আকৃষ্ট হয়েছিল। আর তা তোমাদের বিনাশ করবে, যেমন তাদের বিনাশ করেছে। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩১৫৮)

গোপন শিরকের ভয়

গোপন শিরক বা শিরকে খপি। অর্থাৎ ইবাদত করবে লোক দেখানোর জন্য। মানুষ দান করবে, যাতে তার দানশীলতা নিয়ে আলোচনা করা হয়। আবু সাইদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, আমাদের নিকট রাসুল (সা.) বের হলেন, আমরা তখন দাজ্জাল সম্পর্কে আলোচনা করছিলাম। তিনি (সা.) বলেন, আমি কি তোমাদের এমন বিষয় অবহিত করব না, যা আমার মতে তোমাদের জন্য দাজ্জালের চেয়েও ভয়ংকর? বর্ণনাকারী বলেন, আমরা বললাম, হ্যাঁ, অবশ্যই। তিনি বলেন, গোপন শিরক। মানুষ নামাজ পড়তে দাঁড়ায় আর অন্যদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য সুন্দরভাবে নামাজ পড়ে। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৪২০৪)

নারীদের নিয়ে শঙ্কা

রাসুল (সা.) উম্মতকে নারীদের সম্পর্কে বিশেষভাবে সতর্ক করেছেন। কারণ বনি ইসরাঈলের মধ্যে সর্বপ্রথম যে ফিতনা হয়েছিল তা নারীদের নিয়েই। নবী (সা.) থেকে বর্ণিত, অবশ্যই দুনিয়াটা মিষ্টি ফলের মতো আকর্ষণীয়। আল্লাহ তাআলা সেখানে তোমাদের প্রতিনিধি নিযুক্ত করেছেন। তিনি লক্ষ করেন, তোমরা কিভাবে কাজ করো? তোমরা দুনিয়া ও নারী জাতি থেকে সতর্ক থেকো। কেননা বনি ইসরাঈলের মধ্যে প্রথম ফিতনা নারীকেন্দ্রিক ছিল। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৬৮৪১)

অন্য হাদিসে এসেছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, আমি আমার (ইন্তেকালের) পর পুরুষদের জন্য নারীদের ফিতনার চেয়ে বেশি কোনো ফিতনা রেখে যাইনি। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৬৮৩৮)

অনিয়ন্ত্রিত জিহ্বা

লাগামহীন ও অনিয়ন্ত্রিত জিহ্বার ব্যবহার আমাদের জীবনে ব্যাপক বিপর্যয় ডেকে আনে। প্রিয় নবী (সা.) আমাদের এই মুখের ব্যবহারে সতর্ক থাকতে বলেছেন। সুফিয়ান ইবনে আবদুল্লাহ আস-সাকাফি (রা.) বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল (সা.)! আমাকে এমন একটি কথা বলুন, যা আমি ধারণ করতে পারি। তিনি বলেন, তুমি বলো, আল্লাহই আমার রব। তারপর এতে অটল থাকো। তিনি (বর্ণনাকারী) বলেন, আমি আবার বললাম, হে আল্লাহর রাসুল (সা.)! আপনার দৃষ্টিতে আমার জন্য সর্বাধিক আশঙ্কাজনক বস্তু কোনটি? তিনি স্বীয় জিহ্বা ধরে বলেন, এই যে এটি। (জামে তিরমিজি, হাদিস : ২৪১০)

দাজ্জালের ফিতনা

কিয়ামতের আগে সবচেয়ে ভয়াবহ হবে দাজ্জালের ফিতনা। যে ফিতনা সম্পর্কে সব নবী তাঁদের উম্মতকে সতর্ক করে গেছেন। রাসুল (সা.) বলেছেন, আমি তোমাদের দাজ্জালের ফিতনার ব্যাপারে সাবধান করছি, যেমন প্রত্যেক নবী তাঁর সম্প্রদায়কে এ বিষয়ে সাবধান করেছেন। এমনকি নুহ (আ.)-ও তাঁর সম্প্রদায়কে এ থেকে সাবধান করেছেন। তবে এ সম্পর্কে আমি তোমাদের এমন একটি বিষয় পরিষ্কারভাবে বলে দিচ্ছি, যা কোনো নবী তাঁর সম্প্রদায়কে বলেননি। তা হলো এই যে, তোমরা জেনে রাখো, দাজ্জাল কানা হবে। আল্লাহ তাআলা অন্ধ নন। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৭২৪৬)

 

 

কিউএনবি/আয়শা/১৩ই মে, ২০২২/৩০ বৈশাখ, ১৪২৯/সকাল ১০:৫৭

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit