আন্তর্জাতিক ডেস্ক : দিল্লি হাইকোর্টের সাম্প্রতিক রায়ে বলা হয়েছে, শুধুমাত্র ‘শারীরিক সম্পর্ক’ কথাটি উচ্চারণ করলেই তা ধর্ষণের প্রমাণ হয়ে যায় না। আদালত জানিয়েছে, এমন শব্দ ব্যবহার কোনো প্রমাণ ছাড়া ধর্ষণ বা জোরপূর্বক যৌন সম্পর্কের মামলা টিকিয়ে রাখার জন্য যথেষ্ট নয়।
আদালত বলেছে, “এভাবে অস্পষ্টভাবে বলা ‘শারীরিক সম্পর্ক’ কথাটি আইনগতভাবে ধর্ষণ প্রমাণের মানদণ্ডে পড়ে না।” আদালতের পর্যবেক্ষণ, প্রসিকিউশন বা নিম্ন আদালত কেউই কিশোরীকে প্রশ্ন করেনি, সে ঠিক কী বোঝাতে চেয়েছে। তাই অপরাধের মূল উপাদান প্রমাণ হয়নি।
বিচারপতি ওহরি আরও বলেন, “শিশু সাক্ষীর বক্তব্য যদি অসম্পূর্ণ হয়, আদালতের দায়িত্ব থাকে প্রশ্ন করে সেটি পরিষ্কার করা। আদালত কোনো অবস্থাতেই নির্বিকার থাকতে পারে না।” ফরেনসিক রিপোর্ট বা চিকিৎসা প্রমাণের অভাবে আদালত বলে, পুরো মামলাটি কেবল মৌখিক সাক্ষ্যের ওপর নির্ভর করেছে। রায়ে আরও বলা হয়েছে, “শারীরিক সম্পর্ক” শব্দটি ভারতীয় দণ্ডবিধি বা পকসো আইনে কোথাও সংজ্ঞায়িত নয়, তাই এর অর্থ নির্ভর করে সাক্ষীর বক্তব্যের ওপর।
রায়ের ভাষায়, “এই মামলায় তা ব্যাখ্যা করা হয়নি, তাই অপরাধ প্রমাণিত বলা যাবে না।” আদালত আরও জানিয়েছে, আবেগ বা সহানুভূতি নয়, বিচার হয় প্রমাণের ভিত্তিতে। আর প্রমাণ না থাকলে দণ্ড টেকসই নয়। এই মামলায় বিচার প্রক্রিয়ার মধ্যে আদালত একটি গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্যও করেছে— ভবিষ্যতে শিশু সাক্ষীর ক্ষেত্রে আদালতকে আরও সক্রিয় ও অংশগ্রহণমূলক হতে হবে, যাতে সত্য উদঘাটন হয়।
আইনজীবীরা বলছেন, এই রায় যৌন অপরাধ মামলায় প্রমাণের মানদণ্ড নতুনভাবে নির্ধারণ করবে। সমাজে ‘শারীরিক সম্পর্ক’ শব্দের ব্যবহার যেভাবে প্রচলিত, তার আইনগত ব্যাখ্যা এক নয়— এটিই রায়ের মূল বার্তা।
কিউএনবি/আয়শা/২২ অক্টোবর ২০২৫,/সন্ধ্যা ৬:০৫