শুক্রবার, ০১ অগাস্ট ২০২৫, ০১:১৫ পূর্বাহ্ন

অর্থ পাচারকারীদের সঙ্গে ‘সমঝোতার’ ইঙ্গিত গভর্নরের

Reporter Name
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ১২ জুন, ২০২৫
  • ২২ Time View

ডেস্ক নিউজ : অন্তর্বর্তী সরকার বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগে যেসব ধনকুবেরকে অভিযুক্ত করেছে তাদের সঙ্গে ‘আর্থিক সমঝোতা’য় পৌঁছানো হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে বাংলাদেশ।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে বলেছেন, অপেক্ষাকৃত কম গুরুতর মামলাগুলোর ক্ষেত্রে আর্থিক সমঝোতা ‘অন্যতম বিকল্প’ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।

তিনি বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের কাছ থেকে অর্থ পুনরুদ্ধারে ভবিষ্যৎ আন্তর্জাতিক মামলা পরিচালনায় তিনি ১০ কোটি ডলার পর্যন্ত অর্থ সংগ্রহের লক্ষ্য রাখছেন।

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। তারা বলছে, বিগত সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা দেশ থেকে বহু বিলিয়ন ডলার পাচার করেছেন।

এ সপ্তাহে যুক্তরাজ্য সফরের আগে ঢাকায় দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, অভিযুক্ত ব্যক্তিদের কথিত কার্যকলাপের প্রকৃতির ওপর বাংলাদেশ ব্যাংকের পদক্ষেপ নির্ভর করবে।

গভর্নর বলেন, ‘যদি আইন লঙ্ঘনের প্রকৃতি তুলনামূলকভাবে হালকা ধরনের হয়…তবে আমরা দেওয়ানি মামলা করব এবং সেই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে আর্থিক সমঝোতার কথা বিবেচনা করা হবে।’

তবে সম্ভাব্য কোন ব্যক্তিরা এ প্রক্রিয়ার আওতায় আসতে পারেন, সে বিষয়ে কোনো উদাহরণ দেননি তিনি।

ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন প্রশাসন ইতিমধ্যে শেখ হাসিনার পরিবারসহ আগের সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ও রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী পরিবারগুলোর বিরুদ্ধে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ১১টি তদন্ত শুরু করেছে।

বর্তমান প্রশাসন কিছু অভ্যন্তরীণ ব্যাংক অ্যাকাউন্টও জব্দ করেছে এবং শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে দেশ থেকে পাচার করা সম্পদ পুনরুদ্ধারের প্রচেষ্টায় বিদেশি আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর সঙ্গে সহযোগিতা করছে।

পাচার করা অর্থ শনাক্ত ও পুনরুদ্ধারে এ ধরনের প্রচেষ্টা এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে ড. ইউনূস এ সপ্তাহে লন্ডন সফরকালে যুক্তরাজ্য সরকারের কাছ থেকে আরও ‘উৎসাহব্যঞ্জক সহযোগিতা’ কামনা করেন।

প্রধান উপদেষ্টা ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘এটা চুরি হওয়া অর্থ। আইনগতভাবে এবং “আমি বলব নৈতিকভাবেও” যুক্তরাজ্য সরকারের উচিত এই অর্থ শনাক্ত করতে সহায়তা করা।’

সরকারের নির্দেশনায় তৈরি ও গত ডিসেম্বর মাসে প্রকাশিত একটি অর্থনৈতিক শ্বেতপত্রে অনুমান করা হয়, শেখ হাসিনার শাসনামলে দেশ থেকে প্রায় ২৩৪ বিলিয়ন (২৩ হাজার ৪০০ কোটি) ডলার পাচার হয়েছে।

আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের (আইএমএফ) সাবেক কর্মকর্তা আহসান মনসুর ও অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তা অভিযোগ করেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মিত্ররা ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ দখল করে জাল ঋণ নিয়ে কিংবা সরকারি অবকাঠামোগত প্রকল্পগুলো থেকে আত্মসাৎ করে দেশের বাইরে অর্থ পাচার করেছেন।

আহসান মনসুর জানান, তার দল আন্তর্জাতিক মামলা পরিচালনায় অর্থ জোগানো প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করেছে ও বাংলাদেশে এসে সম্পদ পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়ায় সহায়তার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছে। মামলা পরিচালনায় অর্থের জোগান দেওয়া সংস্থাগুলোর খরচের মধ্যে আছে আইনজীবীর ফি, আদালতের ব্যয় ইত্যাদি। বিনিময়ে মামলায় সফল হলে সমঝোতার ভিত্তিতে বা পুরস্কার হিসেবে বা আগেই নির্ধারণ করা অর্থ গ্রহণ করে থাকে তারা।

গভর্নর বলেন, ‘আমরা লিটিগেশন ফান্ডিংয়ের দিকে নজর দিচ্ছি এবং এ নিয়ে খুবই ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছি। আমরা চাই, যতটা সম্ভব অর্থ এ উৎস থেকে জোগাড় করতে।’

এ বিষয়ে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিভিত্তিক লিটিগেশন ফান্ডার (মামলার অর্থ জোগানদাতা) অমনি ব্রিজওয়ে বলেছে, তাদের নির্বাহীরা এ বছরের প্রথমার্ধে ঢাকা সফর এবং আহসান মনসুরসহ ১৬টির বেশি ব্যাংকের জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপকদের সঙ্গে ‘কয়েক দফা আলোচনা’ করেছেন।

অমনি ব্রিজওয়ের এনফোর্সমেন্ট বিভাগের ব্যবস্থাপনা পরিচালক উইগার উইলিঙ্গা বলেন, ‘আমরা, বিশেষ করে বিদেশে অবৈধভাবে পাচার করা অর্থ সংশ্লিষ্ট খেলাপি ঋণ পুনরুদ্ধারে অর্থায়ন ও ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ব্যাংক খাতকে সহায়তা করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছি।’

কিউএনবি/অনিমা/১২ জুন ২০২৫, /বিকাল ৩:৫৬

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

August 2025
M T W T F S S
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit