মঙ্গলবার, ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৪:৪৮ অপরাহ্ন

আখাউড়া পৌর এলাকায় তিনবছর ধরে দুর্ভোগ শহীদ পরিবারের দিন-রাত মটর চালিয়ে পানি সরাতে হয়

Reporter Name
  • Update Time : শুক্রবার, ২১ জুন, ২০২৪
  • ২৯৪ Time View
বাদল আহাম্মদ খান ,ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি : এই বুঝি সাপে কাটলো। এই বুঝি কোলের শিশুটি পানিতে পড়ে গেলো। চলতে গিয়ে পা পিছলে পড়ে যাওয়ার ভয় তো আছেই। মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়ার মতো কোনো জো নেই। স্বজনদেরকে দাওয়াত দিতেও লজ্জা, ভয়।এ হাল একটি শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের। গত তিন বছরের বেশি সময় ধরে তারা পানিবন্দি হয়ে আছেন। বর্ষা এলেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন পরিবারটি। বৃষ্টির পানি আর চোখের পানি যেন এ পরিবারে একাকার। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার ধর্ণা দিয়েও কাজ হয়নি। বাধ্য হয়ে নিজেরা দিন-রাত মটর চালিয়ে পানি সেচ করেন। এখন এতেও কোনো কাজ হচ্ছে না।
পরিবারটি প্রধানমন্ত্রী দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া পৌরসভার প্রধান এলাকা বলতে সড়ক বাজারকে বুঝানো হয়। আর এখানেই অবস্থিত ডাকঘর সংলগ্নস্থানে বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ আলমগীর করিম (বীরপ্রতীক) এর বাসভবন। সেখানে তাঁর ভাই ও বোনের পরিবার বসবাস করেন।বৃহস্পতিবার সকালে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির উঠান ভর্তি পানি। ফেলে রাখা হয়েছে পানি সরানোর মোটা পাইপ। বাড়ির পিছনের দিকে পুকুরের পাশে বেশ উঁচু করে দেওয়াল দেওয়া আছে যেন পানি ঢুকতে না পারে। প্রবেশমুখেও রয়েছে পানি আটকানোর ব্যবস্থা। এতে আশপাশ থেকে সাময়িক সময়ের জন্য পানি আসা বন্ধ করা গেলেও বৃষ্টির পানিতে হাঁটু সমান পানি জমে যায় ওই বাড়িতে।

আশেপাশের ছয়টি পরিবারও তখন দুর্ভোগের মুখে পড়ে।শহীদ আলমগীর করিমের ভাগিনা মো. রুহুল আমিন সুমন ক্ষুব্ধ কণ্ঠে অভিযোগ করেন, প্রায় তিন বছর আগে একটি ড্রেন ভেঙ্গে ফেলার পর থেকেই তারা এ দুর্ভোগে আছেন। ওই ড্রেন দিয়েই তাদের বাড়িসহ আশেপাশের বাড়ির পানি সরে যেতো। উন্নয়নকাজের জন্য ড্রেন ভেঙে ফেলা হলেও এর বিকল্প কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি। পৌর মেয়র, ইউএনওসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে দৌঁড়ঝাপ করেও তিনি কোনো বিহিত পাননি। পৌর কর্তৃপক্ষ ড্রেন নির্মাণের বিষয়ে একাধিকবার আশ্বাস দিলেও কোনো লাভ হয়নি। আমি এখন এ বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। কেননা, তিনি আমাদেরকে আশ্বস্থ করেছেন যে যেকোনো ধরণের সহায়তায় জন্য যেন ওনার দ্বারস্থ হই।

শহীদ আলমগীর করিমের ভাতিজা মো. মারজান উল করিম সুজন বলেন, ‘মাঝে মাঝে বাড়ির উঠানে ও ঘরে হাঁটু পানি থাকে। একাধিকবার বাড়িতে সাপ উঠেছে। সব সময় ভয়ে থাকি আমার ছোট দুই সন্তান কখন পানিতে পড়ে যায়। আমরাসহ আশেপাশের কয়েকটি পরিবারের লোকজন চরম দুর্ভোগে আছি। কিন্তু এ বিষয়ে পৌর কর্তৃপক্ষের কোনো ধরণের সহযোগিতা পাওয়া যাচ্ছে না।’
আখাউড়া পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. শিপন হায়দার বলেন, ‘এ পরিবারটির দুর্দশা দেখলে চোখে পানি আসবে। এভাবে দিনের পর দিন মানুষ পানিবন্দি হয়ে থাকতে পারে না। বিষয়টি নিয়ে আমি পৌরসভার সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেছি। দীর্ঘদিনেও এর কোনো সুরাহা হয়নি।আখাউড়া পৌরসভার উপ-সহকারি প্রকৌশলী মো. ফয়সাল আহমেদ জানান, পানি সরানোর জন্য একটি ড্রেন নির্মাণ কাজ প্রক্রিয়াধীন। ইতিমধ্যেই একজন ঠিকাদারকে এ বিষয়ে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আশা করি দ্রুত কাজ করা হবে।

ড্রেন নির্মাণে দায়িত্ব পাওয়া ঠিকাদার মো. ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘ড্রেন নির্মাণের জন্য পৌরসভা যে জায়গাটি দেখিয়েছে সেটি ডাকঘরের অর্থাৎ তাদের জায়গা। কিন্তু ডাকঘরের জায়গা দিয়ে তো আর তারা ড্রেন করতে দিবে না। ডাকঘর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমি এ নিয়ে কথাও বলেছি। পৌরসভা যদি এ বিষয়ে ফয়সালা দিতে পারে তাহলে আমি কাজ করতে পারবো।’ 

কিউএনবি/অনিমা/২১ জুন ২০২৪,/রাত ৯:০০

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

September 2025
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit