ডেস্ক নিউজ : গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে একটি ক্লিনিকে অস্ত্রোপচারের পর মাসুরা বেগম (৩০) নামে এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে নবজাতক কন্যা শিশুটি বেঁচে আছে।
শুক্রবার দুপুরে কাশিয়ানী উপজেলা সদরের ‘নিরাময় নার্সিং হোম এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে’ এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনার পর রাতেই ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ নিহতের স্বজনদের সঙ্গে ২ লাখ টাকায় রফাদফা করেন। পরে ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশের দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে।
নিহত প্রসূতি উপজেলার মহেশপুর ইউনিয়নের রামপুরা গ্রামের ভ্যান চালক কালাম শেখের স্ত্রী।
নিহতের স্বজনরা জানান, শুক্রবার বেলা সাড়ে ১০টার দিকে প্রসূতি মাসুরা বেগমকে কাশিয়ানীর নিরাময় নার্সিং হোম এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অস্ত্রোপচার করতে নিয়ে আসা হয়। দুপুর ২টায় মাসুরা বেগমকে অস্ত্রোপচারের জন্য অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়। ক্লিনিক মালিক ও ডা. আসলামুজ্জামান অস্ত্রোপচার করেন। ১৫ মিনিট পর জন্ম নেয়া নবজাতক শিশুকে অপারেশন থিয়েটার থেকে বের করা হয়। পৌনে ১ ঘণ্টা পর মাসুরা বেগমকে অচেতন অবস্থায় অপারেশন থিয়েটার থেকে বের করে কেবিনে আনা হয়।
তবে মাসুরাকে ঘুমের ইনজেকশন দেওয়া হয়েছে বলে স্বজনদের জানান চিকিৎসকরা। দীর্ঘ সময় পরও জ্ঞান না ফেরায় স্বজনদের সন্দেহ হয়। তারা প্রসূতির নাকের কাছে হাত নিয়ে দেখেন শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে গেছে। পরে ক্লিনিকের নার্সদের ডাকতে গেলে কাউকে পায়নি। এ ঘটনার পর নার্সরা ক্লিনিক ছেড়ে পালিয়ে যান।
নিহতের বোন জামাই রিপন মোল্যা বলেন, চিকিৎসক ভুল অপারেশন করিয়ে অপারেশন থিয়েটারেই মাসুরাকে মেরে ফেলেছে। ক্লিনিক মালিক ডা. আসলামুজ্জামান নিজেই অচেতন ও অপারেশন করেন। তিনি মাসুরার মৃত্যুর বিষয়টি আমাদের না জানিয়ে গোপন রেখেছিলেন। আমরা চিকিৎসকের শাস্তি দাবি করছি।
এরআগেও এ ক্লিনিকটিতে একাধিক প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। অনেকে ভুল চিকিৎসায় পঙ্গুত্ব বরণ করেছে। ক্লিনিকটি দ্রুত বন্ধের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
ক্লিনিকের মালিক ও অস্ত্রোপচার চিকিৎসক ডা. আসলামুজ্জামান কামাল নিহতের স্বজনদের সঙ্গে ২ লাখ টাকায় মীমাংসার কথা স্বীকার করে বলেন, সিজারের নির্দিষ্ট তারিখের ১০ দিন আগে প্রসূতির স্বজনরা সিজার করিয়েছেন। সিজারের তারিখ ছিল এই মাসের ২৫ তারিখে। এরআগে একটি নবজাতক মারা যাওয়ায়, তারা এবার আগেই সিজার করতে এসেছিলেন। এছাড়া ওই নারীর শারীরিক কিছু সমস্যাও ছিল। যা তার স্বজনরা আমাদেরকে জানায়নি। যে কারণে এ দুর্ঘটনাটি ঘটেছে।
কাশিয়ানী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মাহমুদুল হাসান বলেন, প্রসূতির মৃত্যুর বিষয়ে আমরা কোনো অভিযোগ পাইনি। তবে আপনার মাধ্যমে জানলাম। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কিউএনবি/অনিমা/১৬ ডিসেম্বর ২০২৩,/বিকাল ৪:৩৬