আন্তর্জাতিক ডেস্ক : শুক্রবার (২৩ মে) এক এক্স পোস্টে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বাণিজ্য বিষয়ক প্রধান মারোস সেফকোভিচ জানান, তিনি মার্কিন বাণিজ্য বিষয়ক প্রতিনিধি জেমিসন গ্রিয়ার এবং বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিকের সাথে এ বিষয়ে কথা বলেছেন।
তিনি আরও বলেন, ‘ইইউ যুক্তরাষ্ট্রের সাথে উভয়ের জন্য কার্যকর একটি বাণিজ্য চুক্তি করতে সম্পূর্ণরূপে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে তার ভিত্তি হবে সম্মান, হুমকি নয়। আমরা আমাদের স্বার্থ রক্ষার জন্য প্রস্তুত।’
গত শুক্রবার ট্রাম্প জানান, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে আমদানি বিলাসী পণ্যের উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের সুপারিশ করেছেন তিনি। যা আগামী ১ জুন থেকে কার্যকর হবে। 
 
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ এক পোস্টে ট্রাম্প বলেন, ‘ইইউ’র সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনায় কোনো অগ্রগতি হচ্ছে না। তাই আমি আগামী ১ জুন থেকে সরাসরি ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের সুপারিশ করছি।’
 
পরে ওভাল অফিসে এক বক্তব্যে ট্রাম্প বলেন, তিনি ইইউর সাথে কোনো চুক্তি করতে চাইছেন না। তবে আরও ইউরোপীয় কোম্পানি যদি যুক্তরাষ্ট্রে বড় ধরনের বিনিয়োগ করে তবে শুল্ক আরোপ বিলম্বিত হতে পারে। তার কথায়, ‘আমি কোনো চুক্তি চাইছি না। আমরা চুক্তিটি ঠিক করেছি। সেটা হলো ৫০ শতাংশ শুল্ক।’
 
ইউরোপীয় ইউনিয়ন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য অংশীদার। যুক্তরাষ্ট্র সরকারের হিসেবে, ইইউ তাদের দেশে বছরে ৬০০ বিলিয়ন ডলারের পণ্য পাঠায় আর ৩৭০ বিলিয়ন ডলারের পণ্য যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করে।
 
এরপর ইউরোপীয় নেতারা সতর্ক করে বলেন, এই শুল্ক উভয় পক্ষকেই ক্ষতিগ্রস্ত করবে। জার্মান অর্থনীতিমন্ত্রী ক্যাথেরিনা রেইচ বলেন, ‘ইউরোপীয় কমিশন যাতে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে পৌঁছায় তা নিশ্চিত করার জন্য সবকিছু করতে হবে। অন্যদিকে ফরাসি বৈদেশিক বাণিজ্যমন্ত্রী লরেন্ট সেন্ট-মার্টিন বলেন, ‘ইইউ উত্তেজনা কমাতে পছন্দ করে তবে জবাব দিতেও প্রস্তুত।’
 
ডাচ প্রধানমন্ত্রী ডিক স্কুফ বলেন, বাণিজ্য আলোচনায় ইইউ যে কৌশল নিয়েছে তাকে তিনি সমর্থন করছেন। তার কথায়, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আলোচনায় আগেও আমরা শুল্ক কমতে ও বাড়তে দেখেছি।’
 
ট্রাম্পের অভিযোগ হলো ইউরোপ অসম বাণিজ্য সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে চায় কারণ তারা যুক্তরাষ্ট্র থেকে যে পরিমাণ পণ্য আমদানি করে তার চেয়ে অনেক বেশি পরিমাণ যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বিক্রি করে। তিনি বলেন, এই বাণিজ্য ঘাটতি আমেরিকান কোম্পানিগুলোর প্রতি অন্যায়। বিশেষ করে তিনি গাড়ি ও কৃষিপণ্যের বিষয়ে থাকা নীতিগুলো উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছেন।
ট্রাম্প অ্যাপলকেও সতর্ক করে বলেছেন আইফোন আমেরিকায় তৈরি না হলে আরও ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক প্রয়োগ করবেন। পরে এটি অন্য স্মার্টফোনের জন্যও প্রযোজ্য হবে বলে জানান। ট্রাম্পের হুমকির পর শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নে শেয়ার বাজারের দরপতন ঘটে। 
 
 
কিউএনবি/আয়শা/২৪ মে ২০২৫, /সন্ধ্যা ৬:১৪