বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:৩৩ পূর্বাহ্ন

জাকাত প্রদানে লক্ষণীয় ও করণীয়

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ১ এপ্রিল, ২০২৪
  • ৬৮ Time View

ডেস্ক নিউজ : সুস্থ মস্তিষ্ক, আজাদ, বালেগ মুসলমান নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হলে জাকাত ফরজ হয়ে যায়। শর্ত হলো—নিসাব পরিমাণ সম্পদ পূর্ণ এক চান্দ্র বছর (৩৫৪ দিন) মজুদ থাকা।

জাকাতের নিসাব : ৭.৫ তোলা স্বর্ণ বা ৫২.৫ তোলা রুপা। টাকা ও ব্যাবসায়িক পণ্যের নিসাব নির্ধারণে স্বর্ণ-রুপা হলো পরিমাপক।

গরিবদের জন্য যেটি বেশি লাভজনক হবে, সেটিকে পরিমাপক হিসেবে গ্রহণ করাই শরিয়তের নির্দেশ। তাই টাকা ও পণ্যের বেলায় বর্তমানে রুপার নিসাবই পরিমাপক হিসেবে গণ্য হবে। যার কাছে সাড়ে ৫২ তোলা রুপার সমমূল্যের টাকা বা ব্যাবসায়িক পণ্য মজুদ থাকবে, তার ওপর জাকাত ফরজ হবে।
জাকাত ও দান প্রতিপালন করা হয় : মহান আল্লাহ জাকাত ও দান প্রতিপালন করে পাহাড় সমান করেন।

রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, আল্লাহ দাতার কল্যাণার্থে দান প্রতিপালন করেন। যেমন—তোমাদের কেউ অশ্ব শাবক প্রতিপালন করে থাকে, অবশেষে সেই দান পাহাড় বরাবর হয়ে যায়। (বুখারি, হাদিস : ১৪১০)
জাকাত প্রদানে অনিষ্ট দূর হয় : নবীজি (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি তার সম্পদের জাকাত আদায় করে দেয়, তার কাছ থেকে তার অনিষ্ট দূর হয়ে যায়। (সহিহ আত তারগিব, হাদিস : ৭৪৩)

যাদের জাকাত দেওয়া যাবে : নিসাবের মালিক নয়, এমন গরিব লোকদের জাকাত দেওয়া যাবে।

(সুরা : তাওবা, আয়াত : ৬০)
শর্ত হলো—তাকে মালিক বানিয়ে দেওয়া, যাতে সে নিজের খুশি মতো তার প্রয়োজন পূরণ করতে পারে।

যাদের জাকাত দেওয়া যাবে না : মা-বাবা, দাদা-দাদি, নানা-নানি বা তাদের ওপরের স্তরের কাউকে। ছেলে-মেয়ে, নাতি-নাতনি বা তাদের নিম্ন স্তরের কাউকে। স্বামী স্ত্রীকে। নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিককে।

নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিকের নাবালক সন্তানকে। মসজিদ-মাদরাসা নির্মাণে এবং পুল, রাস্তা, হাসপাতাল বানানোর কাজে। মৃতের দাফনের কাজে এবং অমুসলিমকে জাকাতের টাকা দেওয়া যাবে না।
গোপনে দান করা বেশি ভালো : অন্যদের উৎসাহী করার উদ্দেশ্যে প্রকাশ্যে দান করা ভালো। তবে গোপনে দান করা বেশি ভালো। ইরশাদ হয়েছে, ‘যদি তোমরা প্রকাশ্যে দান করো, তবে তা কতই না ভালো। আর যদি গোপনে দান করো এবং অভাবগ্রস্তদের দিয়ে দাও, তবে তা তোমাদের জন্য আরো বেশি ভালো।’

(সুরা : বারাকা, আয়াত : ২৭১)

জাকাত গ্রহীতাকে প্রকাশ করা : যে জাকাত গ্রহীতা নিজেকে গোপন রাখতে চায়, প্রকাশিত হওয়াকে লজ্জাজনক মনে করে, তাকে সমাজের সামনে প্রকাশ করে তার মনে কষ্ট দেওয়া জায়েজ নয়। ইরশাদ হয়েছে, ‘নম্র কথা বলে দেওয়া এবং ক্ষমা প্রদর্শন করা ওই দান-খয়রাত অপেক্ষা উত্তম, যার পরে কষ্ট দেওয়া হয়।’

(সুরা : বাকারা, আয়াত : ২৬৩)

গরিব আত্মীয়কে জাকাত দেওয়ার লাভ :  আত্মীয়-স্বজন যদি জাকাত গ্রহণের উপযুক্ত হয় তাহলে তাদের জাকাত দেওয়া দিগুণ সওয়াবের কাজ। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, গরিবদের দান করা শুধু দান বলেই গণ্য হয়। কিন্তু আত্মীয়-স্বজনকে দান করলে তা দানও হয় এবং আত্মীয়তাও রক্ষা করা হয়। (তাই সওয়াবও দিগুণ)। (তিরমিজি, হাদিস : ৬৫৮)

যাকে জাকাত দেওয়া উত্তম : যে ব্যক্তি গরিব, দ্বিনদার। যে সাহায্যের জন্য কারো দরজায় যায় না। তার অভাবের কথা কাউকে বলেও না। এমন ব্যক্তিকে জাকাত দেওয়া সবচেয়ে উত্তম। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, প্রকৃত মিসকিন সে নয়, যে মানুষের কাছে ভিক্ষার জন্য ঘুরে বেড়ায় এবং এক-দুই লুকমা অথবা এক-দুটি খেজুর পেলে ফিরে যায়, বরং প্রকৃত মিসকিন সেই ব্যক্তি, যার এতটুকু সম্পদ নেই, যাতে তার প্রয়োজন মিটতে পারে। এবং অবস্থা সেরূপ বোঝা যায় না যে তাকে দান-খয়রাত করা যাবে। আর সে মানুষের কাছে যাচনা করে বেড়ায় না। (বুখারি, হাদিস : ১৪৭৯)

লেখক : মুহাদ্দিস, জামিয়া আম্বরশাহ আল ইসলামিয়া কারওয়ান বাজার, ঢাকা

কিউএনবি/অনিমা/০১ এপ্রিল ২০২৪/দুপুর ১:৩৫

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2024
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit