চোখের আড়াল, মনের আড়াল
————————————–
আউট অফ সাইট, আউট অফ মাইন্ড – এরচেয়ে বড় কোন সত্যি নাই। যা চোখের আড়াল তা মনের আড়াল। চোখের সামনে যা তাকে তো ভুলে থাকা যায়না, হোক অপ্রিয় কলিগ বা অপ্রয়োজনীয় বাসার লোক, ব্যাস্ততা যতই থাকুক রেসপন্স করতেই হয়। অথচ যত প্রিয়ই হোক চোখের আড়াল হলে অত মনে পড়েনা, অবসরে আয়োজন করতে হয়।
আজকাল ফেইসবুকের আড়াল তো মনের আড়াল। ফেইসবুকের অনেক নেগেটিভ দিক তবুও আমরা আসক্ত এতেই। ঘুরেফিরে ঘন্টা না পার হতে, সামান্য অবসরে ক্লিক করিই। তো এখানে নিয়মিত দেখাদের সাথেও একধরনের কানেক্টিভিটি তৈরী হয়। কখনো কাউকে পরিবারের সদস্য বা বন্ধুর মতোই আপন লাগে।
কয়েকদিন আগে এক ফেইসবুক ফ্রেন্ডের সাথে হুট করে দেখা-আড্ডা হলো। কাকতালীয়ভাবে কাছাকাছি ছিলাম তিনি নক দিলেন এভাবেই। তো, এমন না তার সাথে খুব ভালো যোগাযোগ ছিলো। তিনি নিজেই জানালেন, ঢাকা এসে যাদের সাথে দেখা করবো তার একটা লিস্ট করেছি। আপনি ছিলেন না সে তালিকায়।
–তো ডাকলেন কেন?
–হঠাৎ আপনার পোস্ট চোখের সামনে এলো তখন মনে হল উনার সাথে চা খেতে খেতে আড্ডা দেয়া যায়। এই যে চোখের সামনে পড়া!
আমি জানি, এই পৃথিবীতে আমি না থাকায় কোন কিছুই এক মুহুর্তের জন্য থেমে থাকবেনা। সূর্য্য একদিন দেরী করে উঠবেনা, পাখিরাও একইরকম গান গাইবে, বাতাস ছুঁয়ে দিবে গাছের পাতাকে, নতুন সন্তানের ভুমিষ্ট হবে।
তাইতো যতক্ষণ আছি জানাই আমি আছি। আমি ছিলাম। থাকলে থাকার মতোই থাকি, না থাকলে নাই।
তো সবাই সবার ফ্রেন্ডলিষ্টে থাকেনা স্বাভাবিক। প্রতিদিন দেখা হওয়া পরিবারের লোকজন ছাড়া খুব আপন বন্ধুশ্রেনীর কেউ যদি বলে জায়গামতো আছো, ফেইসবুকে না থাকলে কি যায়-আসে? এরচেয়ে ভন্ডামিপূর্ণ কথা আর নাই। এক বান্ধবী বলছিলো, তোর সাথে যোগাযোগ আছে, থাকবেই, ফেইসবুকে না থাকায় আর কি হয়? বলছিলাম তারে, কেউ আমার ফেইসবুক ফ্রেন্ডলিষ্টে নাই মানে সে আমার কোথাও নাই….
লেখিকাঃ শাহরিয়া দিনা নিয়মিত লেখালেখি করেন। লেখালেখি করেন নিজের আনন্দ সৃষ্টির জন্যে, নিজের আনন্দভুবন গড়ার জন্যে। জীবনের খন্ডচিত্র গুলো সোশ্যাল মিডিয়ায় সুনিপুন কারিগরের মত এঁকে থাকেন। আজকের লেখাটি তাঁর ফেসবুক টাইমলাইন থেকে সংগৃহিত।
কিউএনবি/বিপুল/২৬.০১.২০২৩/ সন্ধ্যা ৬.১৮